গত বছরের শেষের দিকে আলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশের হাইকোর্ট। এবার সেই সাজা আরও কমিয়ে ১৪ বছর করা হল। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের কাছে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের চেষ্টার একটি মামলায় আলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার যাবজ্জীবন সাজা কমানো হয়েছে। এছাড়াও আরও পাঁচ জনের কারাদণ্ড কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজা কমানো নিয়ে একটি আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তার এই রায় দেন।
আরও পড়ুন: ‘ভারতের সার্বভৌমত্বের জন্য বিপজ্জনক’, আলফা-র উপর নিষেধাজ্ঞা ৫ বছর বাড়াল কেন্দ্র
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পরশে বড়ুয়া এবং প্রাক্তন সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা আকবর হোসেন, লিয়াকত হোসেন, হাফিজুর রহমান ও শাহাবুদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। এই মামলায় বিএনপি-জামায়াত আমলের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকেও খালাস দিয়েছিল আদালত। এছাড়াও মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত অন্য ছয় আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। জানা গিয়েছে আলফা নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, চট্টগ্রাম হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে আলফার ডেরায় নিরাপদে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার সময় সেগুলি ধরা পড়ে। ২০০৪ সালের এপ্রিলে আগ্নেয়াস্ত্র ভর্তি ট্রাকগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেই ট্রাক নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের জড়িত থাকারও অভিযোগ উঠেছিল। ওই ট্রাক থেকে যে সমস্ত অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। তারমধ্যে ছিল ২৭ হাজার গ্রেনেড, ১৫০টি রকেট লঞ্চার, ১১ লাখের বেশি গোলাবারুদ, ১১০০টি সাব মেশিনগান এবং ১১.৪১ মিলিয়ন বুলেট।
আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালানের দায়ে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ বড়ুয়া, বাবরসহ অন্যদের মৃত্যুদণ্ড দেয়। যদিও বড়ুয়া বর্তমানে চিনে রয়েছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। ফলে বিচারের সময় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তখন তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এনআইয়ের-এর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাতেও নাম রয়েছে পরেশের। অভিযোগ ওঠে, তৎকালীন সময়ে আলফার পরেশ বড়ুয়াকেও বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছিল। উল্লেখ্য, পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বে আলফা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি দল অসমকে মুক্ত করার জন্য সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত।
জানা যায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন আওয়ামী লিগ সরকার বাংলাদেশে ভারতবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে দমন অভিযান চালিয়েছিল। বাবর ও অন্য পাঁচজনের খালাস এবং বড়ুয়ার সাজা কমানোর বিষয়টি আসে যখন হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মহম্মদ ইউনুসের অধীনে অন্তর্বতী সরকার ঢাকায় দায়িত্ব গ্রহণ করে।