সন্তানের বয়স যদি পাঁচ বছরের কম হয়, তাহলে তার কাস্টডি পাওয়ার অধিকার রয়েছে মানসিক অসুস্থ মায়েরও। এমনই পর্যবেক্ষণ করল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। তবে আদালত জানায়, যদি মায়ের মানসিক অসুস্থতার কারণে শিশুর ক্ষতির কোনও সম্ভাবনা থাকে, সেই ক্ষেত্রে কাস্টডি দেওয়া যায় না। উল্লেখ্য, সন্তানকে ‘বেআইনি ভাবে’ আটকে রাখার অভিযোগে দায়ের করা আবেদনের শুনানির চলাকালীন এই তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করে উচ্চ আদালত।
মামলার আবেদনকারীর অভিযোগ, তাঁর ২ বছর বয়সি সন্তানকে বেআইনি ভাবে আটকে রেখেছে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। আবেদনকারীর আরও অভিযোগ, পণের দাবিতে তাঁর ওপর অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন আবেদনকারী মহিলা। আবেদনকারীর অভিযোগ, তাঁর ননদ তাঁকে গালে থাপ্পড় মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল এবং তাঁর ছেলেকে তাঁর থেকে দূরে করে দিয়েছে।
এদিকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আদালতে পালটা দাবি করে, আবেদনকারী বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন, আত্মঘাতী ছিলেন, সামঞ্জস্যজনিত ব্যাধি ছিল এবং আক্রমণাত্মক ছিলেন। এইসব সমস্যার কারণে তিনি ওষুধ খেতেন। তারা আরও দাবি করে যে আবেদনকারী গভীর রাতের পার্টিতে মেতে থাকতেন এবং মদ্যপান করতেন। সন্তানের পর্যাপ্ত যত্ন নিতে ব্যর্থ হন তিনি। মায়ের অবহেলার কারণে শিশুটিকে নাকি প্রায়শই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তারা আরও বলেছেন যে আবেদনকারীকে নিজের ক্ষতি করতে চাইতেন এবং বিয়ের আগেও মানসিক সমস্যায় ভুগতেন। তাই তাদের যুক্তি, মায়ের মানসিক অবস্থা দেখে সন্তানের কল্যাণে কাস্টডি তাদের কাছেই থাকা উচিত। এই সওয়াল জবাবের মাঝেই আদালত গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করে। পাশাপাশি অভিযোগকারী মায়ের আবেদন গ্রহণ করে আদালত। আদালত বলে, ‘মায়ের কোল প্রাকৃতিক দোলনা। সেখানেই শিশুর নিরাপদ। তাই একটি শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য মাতৃ যত্ন এবং স্নেহ অপরিহার্য। শিশুটির জন্মদাতা মাকে যদি কাস্টডি না দেওয়া হয় তবে সেটা মায়ের পাশাপাশি সেই শিশুরও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে।’