যৌন সঙ্গমে যদি কেউ সম্মতি জানায়, তার মানেই কি সেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো করে রাখার সম্মতি? সম্প্রতি এহেন এক প্রশ্নেরই স্পষ্ট জবাব দিল দিল্লি হাই কোর্ট। উচ্চ আদালত সাফ জানিয়ে দিল, কেউ যৌন মিলনে 'হ্যাঁ' বলা মানেই সেটার ভিডিয়ো করা বা তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার সম্মতি নয়। উল্লেখ্য, এক ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত জামিনের আবেদন জানিয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই মামলাতেই দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি স্মরণকান্ত শর্মা বলেন, 'যৌনতায় সম্মতি কখনও সেই মুহূর্তের ভিডিয়ো করে রাখার সম্মতি নয় বা কারও গোপন ছবি তোলার সম্মতিও নয়।' (আরও পড়ুন: নাক কাটল পাকিস্তানের, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পর্দা ফাঁস করে রিপোর্ট 'বন্ধু' তালিবানের)
নিজের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি শর্মা বলেন, 'যদি কোনও একটা সময়ে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার বিষয়ে অভিযোগকারী সম্মতিও জানিয়ে থাকেন, তার মানে এই নয় যে তিনি তাঁর গোপন ভিডিয়ো করার বা ছবি তোলার সম্মতি জানাচ্ছেন। এবং সেই সব ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করারও সম্মতি তিনি জানাচ্ছেন না। যৌনতায় সম্মতি কখনও সেই মুহূর্তের ভিডিয়ো বা ছবি অপব্যবহারের সম্মতি নয়।'
এদিকে জামিনের আবেদন করা অভিযুক্ত দাবি করেছিল, অভিযোগকারী মহিলার সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের 'বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক' ছিল। তবে সেই মহিলাকে সে ঋণ দিয়েছিল। সেই ঋণ মেটাতে ব্যর্থ হন অভিযোগকারী। এরপরই তাদের সম্পর্কে তিক্ততা বাড়ে। এই আবহে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। তবে আদালত জানিয়েছে, এই সম্পর্কে প্রাথমিক ভাবে যৌন মিলনে উভয় পক্ষের সম্মতি থাকলেও পরবর্তীতে অভিযুক্ত প্রতারণা করেছে। অভিযোগ, সম্পর্ক 'মধুর' থাকার সময় অভিযুক্ত নিজেদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো করে রেখেছিল। এবং পরবর্তীতে সেই ভিডিয়ো প্রকাশ করে দেখার ভয় দেখিয়েই নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করেছিল।
এদিকে অভিযুক্ত দাবি করেছিল, অভিযোগকারী নিজে বিবাহিত। এই আবহে তিনি যা যা করেছেন, তার মর্ম তিনি বোঝেন। তবে আদালতের বক্তব্য, নির্যাতিতা বিবাহিত হওয়ায় সেই বিষয়টিকে 'হাতিয়ার' হিসেবে ব্যবহার করেছে অভিযুক্ত। অভিযোগকারী মহিলার সম্মানহানীর হুমকি দিয়ে শোষণ করেছে অভিযুক্ত। এদিকে অভিযোগকারী মহিলা দাবি করেন, অভিযুক্ত তাঁকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বন্ধুত্ব করেছিল। এরপর একটি কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্যে তাঁকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিল। তবে এরপর থেকে সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই নিজের যৌন লালসা মেটানোর জন্যে মহিলার ওপর চাপ দিচ্ছিল সেই অভিযুক্ত। অভিযোগকারী দাবি করেন, ২০২৩ সালের শেষের দিকে দিল্লিতে এসে সেই অভিযুক্ত তাঁকে তাঁর গোপন ভিডিয়ো দেখায়। সে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করে। এরপর দু'দিন ধরে তার সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতে বাধ্য করে সেই অভিযুক্ত। এরপর সেই অভিযুক্ত নাকি হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করে দেয়।