এদিনই হিজাব বিতর্ক নিয়ে চূড়ান্ত রায়দান করে কর্ণাটক হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় যে হিজাব পরা ইসলাম ধর্মের জন্য অপরিহার্য নয়। সামাজিক রীতি হিসেবেই হিজাব পরা হয়ে থাকে। এর প্রেক্ষিতে আদালত জানায়, স্কুল-কলেজে হিজাবের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল তা প্রত্যাহার করার প্রয়োজন নেই। আর এই রায়দানের পরই বিজেপির তরফে বহু নেতা এই রায়কে স্বাগত জানান। অপরদিকে বিরোধীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সরব হন।
এদিন হিজাব মামলার রায় প্রকাশ হতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেন, ‘আদালতের রায়কে স্বাগত জানাই। আমি সকলের কাছে আবেদন করছি যে রাষ্ট্র ও দেশকে এগিয়ে যেতে হবে, আর তাই সবাইকে হাইকোর্টের আদেশ মেনে শান্তি বজায় রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের মৌলিক কাজ হলো পড়াশুনা করা। তাই এসব বাদ দিয়ে তাদের পড়াশুনা করা উচিত এবং ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।’
এদিকে এই রায়ের প্রেক্ষিতে বেঙ্গালুরু দক্ষিণের বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য বলেন, ‘আমি কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানাই; মেয়ে শিক্ষার্থী, বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের জন্য শিক্ষার সুযোগ ও অধিকারকে শক্তিশালী করার জন্য এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সমাজের একটি অংশ মুসলিম মেয়েদের শিক্ষা ও আধুনিকতা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছিল...’
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘হিজাব নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা অত্যন্ত হতাশাজনক রায়। একদিকে আমরা নারীদের অধিকার এবং তাদের ক্ষমতায়নের বড় দাবি করি এবং অন্য দিকে, আমরা তাদের যা খুশি তা পরার অধিকারও দিই না; এই অধিকার আদালতের কাছে থাকা উচিত নয়।’
এদিকে হায়দরাবাদের সাংসদ তথা এআইএমআইএম-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, ‘এই রায় ধর্ম, সংস্কৃতি, মতপ্রকাশ এবং শিল্পের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে। এটা মুসলিম মহিলাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তাদের টার্গেট করা হবে। আধুনিকতা ধর্মীয় রীতিনীতি ত্যাগ করার জন্য নয়। হিজাব পরলে সমস্যা কী?’ একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ওয়াইসি আরও লেখেন, ‘আমি হিজাব নিয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়ের সাথে একমত নই। রায়ের সাথে একমত না হওয়া আমার অধিকার এবং আমি আশা করি আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন। এটা খুবই অযৌক্তিক যে বিচারপতিরা এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন যে ধর্মে কোনটা অপরিহার্য কোনটা নয়।’