তিরুবনন্তপুরমের পলাক্কড় জেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত রেখা কৃষ্ণা। করোনাকালে ভয়াবহ দুঃসময়ে সম্প্রীতির অনন্য নজির তৈরি করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, সেই হাসপাতালে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে ভর্তি ছিলেন এক মুসলিম মহিলা। মৃত্যু পথযাত্রী তিনি। তাঁকে কার্যত হাতছানি দিয়ে ডাকছে মৃত্যু। কিন্তু চিকিৎসকের মনে হয়েছিল কিছু যেন খুঁজছেন ওই রোগিণী। আর কালবিলম্ব করেননি ওই চিকিৎসক। ওই রোগিণীর কানে কানে ডাঃ কৃষ্ণা শোনালেন ইসলাম ধর্মের পবিত্র কলমা। তারপর তিনি দেখেন এক সুন্দর প্রশান্তি ওই রোগিণীর মধ্যে। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সময়তেও এই প্রশান্তি লক্ষ্য করেন চিকিৎসক।
এরপরই ওই চিকিৎসক তাঁরই এক সহকর্মীর সঙ্গে গোটা বিষয়টি আলোচনা করেন। ওই সহকর্মী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সকলের কাছে তুলে ধরেন। ভাইরাল হয় এই ঘটনা। সম্প্রীতির প্রতীক হিসাবে তাঁকে প্রশংসা ভরিয়ে দেয় নেট দুনিয়া। কিন্তু তারপরেও একটি প্রশ্ন থেকেই যায়, ওই বিশেষ সময়ে চিকিৎসক জানলেন কী করে যে কলমা পড়তে হবে।
সেই প্রশ্নের উত্তরে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘আমি জন্মেছি ও বড় হয়েছি দুবাইতে। মুসলিমদের নানা প্রথা সম্পর্কে আমি অবহিত। আমি এরকম একটি পরিবেশে বড় হয়েছি যেখানে সমস্ত বিশ্বাসকে মর্যাদা দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমি আমার কর্তব্য করেছি। এটা কোনও ধর্মীয় আচার পালন করিনি, শুধু মানবিকতার কাজ করেছি।’ অপর এক চিকিৎসক বলেন, ‘অনেকেই শেষ সময়ে কাছের মানুষদের দেখতে চান।তবে ডাঃ কৃষ্ণা যা করেছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে।’
বিদ্বজনেদের মতে, সাধারণত রোগীর অন্তিম সময়ে নিকট আত্মীয়রা বা ধর্মীয় শিক্ষকরা এই ধরণের প্রথা পালন করেন। এক্ষেত্রে অনন্য নজির তৈরি করেছেন ওই চিকিৎসক। ইসলামিক স্কলার আব্দুল হামিদ ফয়জল বলেন, ‘মন ছুঁয়ে যাওয়া কাজ করেছেন চিকিৎসক। চিকিৎসকরাই তো সম্প্রীতির প্রতীক। তাঁর এই মহান আচরণ অনেক কিছু শিক্ষা দেবে।’