একসঙ্গে বড় হওয়া। দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পরিবার ও ব্যবসার উত্তরাধিকার। কিন্তু সেই ভ্রাতৃত্বের মাঝেও এল সম্পত্তি বন্টনের কালো ছায়া। সকলের আশঙ্কা, অবশেষে হাত ছাড়তে পারেন হিন্দুজা পরিবারের ভাইরা। শতাব্দী প্রাচীন লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা ও সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়েই এখন চিন্তিত সকলে।
চিন্তা হওয়ারই কথা। সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১,৫০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ১২ হাজার কোটি টাকা)।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন অনুসারে, বড়ভাই ৮৫ বছর বয়সী শ্রীচাঁদ পরমানন্দ হিন্দুজা বর্তমানে ডিমেনশিয়া(স্মৃতিভ্রংশ) রোগে ভুগছেন। তাঁর ভাই করম, বোন, মা, কাকা এবং হিন্দুজা পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে বর্তমানে তাঁদের কর্পোরেট সংস্থার অংশীদারিত্ব নিয়ে চলছে লড়াই৷ তিন ভাই, গোপীচাঁদ, প্রকাশ এবং অশোক চান তাঁরা পুরনো নীতিতেই চলতে থাকুন। কী সেই নীতি? 'সবকিছুই সবার এবং কোনও কিছুই কারও একার নয়।' ২০১৪ সালে একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে চার হিন্দুজা ভাই সই করে এই নীতিতে সম্মতি জানিয়েছিলেন।
অন্য পথে হাঁটতে চান শ্রীচাঁদ। বছর খানেক আগেই হিন্দুজা ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর দুই মেয়ে বিনু এবং শানু তাঁর হয়ে এই আইনি লড়াই চালাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে শানুর ছেলে করমই দাদুর তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে কেস চালাচ্ছেন। করম বলছেন, ‘পরিবার একত্রিত থাকার অনুভূতি সুন্দর। কিন্তু এখন সময় এসেছে আমাদের পথ আলাদা হওয়ার।’
তাঁদের মতে, ২০১৪ সালের ওই যৌথ ঘোষণাপত্রের কোনও আইনি ভিত্তি নেই। শ্রীচাঁদের নামে থাকা ব্রিটেন এবং সুইজারল্যান্ডের হিন্দুজা ব্যাঙ্ক তাঁর বাবা/দাদুর একার সম্পত্তি। চার ভাইয়ের নয়।
১০৭ বছরের দীর্ঘ ইতিহাস। ব্যাঙ্কিং, গ্যাস, তেল, স্বাস্থ্য পরিষেবা, বিদ্যুৎ-সহ প্রায় ৩৮টি ক্ষেত্রে ছড়িয়ে ব্যবসা। বিশ্বের ধনীতম পরিবারের তালিকায় প্রতি বছর থাকে হিন্দুজাদের নাম। এবার সেই কাহিনীতে বদল আসার খালি সময়ের অপেক্ষা, মনে করছেন অনেকেই।