‘হিন্দুরা গায়েব হয়ে যাবে’- সংসদে দাঁড়িয়ে এমনই দাবি করলেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি দাবি করলেন যে পশ্চিমবঙ্গের মালদা এবং মুর্শিদাবাদ থেকে লোকজন গিয়ে ঝাড়খণ্ডের লোকেদের তাড়িয়ে দিচ্ছেন। তার জেরে হিন্দুদের গ্রামের পর গ্রাম খালি হয়ে যাচ্ছে। যদি এখনই পদক্ষেপ না করা হয়, তাহলে ‘হিন্দুরা গায়েব হয়ে যাবে’ বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ। সেই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও মুর্শিদাবাদ; বিহারের আরারিয়া, কিষানগঞ্জ ও কাটিহার এবং ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনা নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার লোকসভায় বিজেপি সাংসদ দাবি করেন, ২০০০ সালে যখন বিহার থেকে আলাদা হয়ে ঝাড়খণ্ড তৈরি হয়েছিল, তখন সাঁওতাল পরগনায় আদিবাসী জনসংখ্যা ছিল ৩৬ শতাংশ। এখন আদিবাসী জনসংখ্যা কমে ২৬ শতাংশে ঠেকেছে। সেই ১০ শতাংশ আদিবাসী কোথায় গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সাংসদ।
'পঞ্চায়েত প্রধান আদিবাসী মহিলা, স্বামী মুসলিম'
নিজেই সেই 'উত্তর' দেন নিশিকান্ত। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের এখানে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। যে আদিবাসী মহিলারা আছেন, তাঁদের সঙ্গে বিয়ে করছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। এটা হিন্দু-মুসলিমের ব্যাপার নয়।’ তিনি দাবি করেন যে মহিলা আদিবাসী পঞ্চায়েত প্রধানদের স্বামী হচ্ছেন মুসলিমরা।
‘২৬৭টি বুথে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে ১১৭ শতাংশ’
সেই রেশ ধরেই বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘প্রতি পাঁচ বছর সাধারণত ১৫-১৭ শতাংশ ভোটার বৃদ্ধি পায়। তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মধুপুর বিধানসভার প্রায় ২৬৭টি বুথে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে ১১৭ শতাংশ। ঝাড়খণ্ডের কমপক্ষে ২৫টি এমন বিধানসভা আছে, সেখানে জনসংখ্যা ১১০ শতাংশের মতো বেড়েছে।’
‘মালদা ও মুর্শিদাবাদ থেকে আসা লোকজন হিন্দুদের উপরে অত্যাচার করছেন’
বিজেপি সাংসদ দাবি করেন, ‘হিংসা ছড়িয়েছিল, কারণ বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে পুলিশ আছে এবং মালদা ও মুর্শিদাবাদ থেকে ওখানকার লোক এসে আমাদের লোকেদের তাড়িয়ে দিচ্ছেন। আর হিন্দুদের গ্রামের পর গ্রাম খালি হয়ে যাচ্ছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমার একটা কথাও ভুল হলে আমি ইস্তফা দিতে রাজি আছি। বাংলা থেকে আসা লোকজন, মালদা ও মুর্শিদাবাদ থেকে আসা লোকজন হিন্দুদের উপরে অত্যাচার করছেন।……। আর ঝাড়খণ্ডের পুলিশ কোনও কাজ করতে পারছে না।’
কী করতে হবে? পরামর্শ দুবের
বিজেপি সাংসদ দাবি করেন, রিপোর্ট বলছে যে লাগাতার মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা উচিত। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হোক। ধর্মান্তকরণের জন্য আগে যাতে অনুমতি নেওয়া হয়, সেই নিয়ম চালু করারও দাবি তোলেন। নাহলে ‘হিন্দুরা গায়েব হয়ে যাবে’ বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ।