রঙের উৎসব হোলিতে মেতে উঠেছে গোটা দেশ। কিন্তু, ভারতের মধ্যে এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে হোলিতে রং খেলা হয় না। কারণ এই গ্রামে রং খেলাকে অশুভ হিসেবেই ধরা হয়। রং খেললেই নাকি গবাদি পশু এবং মানুষ মারা যায়। সেই বিশ্বাস থেকেই ৩০০ বছর ধরে রং খেলেন না এই গ্রামের মানুষ। এই গ্রামটির নাম হল দুর্গাপুর গ্রাম। ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে বোকারো জেলার কাসমার ব্লকে এই গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস হোলিতে রং খেললে অকল্যাণ হবে। তাই গ্রামের মধ্যে রং খেলা থেকে বিরত থাকেন গ্রামবাসীরা।
কথিত আছে, ওই গ্রামে সাড়ে তিনশো বছর আগে রাজত্ব করতেন রাজা দুর্গাপ্রসাদ দেব। তিনি খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। দুর্গা পাহাড়ের পাদদেশেই ছিল তাঁর হাভেলি। কিন্তু, হোলির দিন পদ্মা রাজার সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধে দুর্গাপ্রসাদ দেবের। সেই সময় তাঁরা পরিবারের সমস্ত সদস্য মারা যান। তারপর থেকেই রং খেলাকে এই গ্রামে অশুভ বলে মনে করা হয়। এছাড়া, ওই গ্রামে একজন বাবাও ছিলেন, যিনি বদরাও বাবা নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি নাকি রং পছন্দ করতেন না। সেই থেকে গ্রামে কোনও পুজোতে বলি হলে ছাগল মোরগের রংও সাদা হয়ে থাকে। গ্রামবাসীদের একাংশের মতে, বদরাও বাবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে রং খেললে গ্রামবাসীদের তার ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়, নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তাই এই গ্রামে রং খেলা হয় না। আবার গ্রামবাসীদের একাংশের মতে, রং না খেলার পিছনে আরেকটি কারণ রয়েছে। সেটি হল ২০০ বছর আগে কিছু মালহার এই গ্রামে এসে দুটি ভিন্ন জায়গায় বসবাস করতে শুরু করেছিল। হোলির দিন মালহাররা প্রচুর রং খেলে। তারপর ওই দিনে মৃত্যু হয় ৫ মালহারের। সেইসঙ্গে গ্রামের দুই ডজনের বেশি গরু মারা যায়। অন্যান্য অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনার পর গ্রামের মানুষ হোলি খেলা চিরতরে বন্ধ করে দেয়।
হোলি উদযাপন না করার রীতি শুধুমাত্র গ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে গ্রামবাসীরা চাইলে অন্য কোথাও বা অন্য গ্রামে গিয়ে রং খেলতে পারেন। এই জন্য গ্রামের কেউ রং খেলতে ইচ্ছুক থাকলে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে বা অন্য গ্রামে গিয়ে রং খেলে আবার গ্রামে ফিরে আসেন। গ্রামের যুবকরাও বড়দের সেই বিশ্বাসকে সম্মান করে গ্রামের মধ্যে রং খেলেন না।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup