অস্ত্র লাইসেন্স কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত তিন আইএএস আধিকারিক - যশ মুদগল, ড. শাহিদ ইকবাল চৌধুরী এবং নীরজ কুমারের বিরুদ্ধে পাঠানো অসম্পূর্ণ বিচার প্রস্তাব জম্মু-কাশ্মীর সরকারের কাছেই ফেরত পাঠিয়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে এই প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়।
সূত্রের খবর, জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্য সচিব অটল দুল্লুকে এই অসম্পূর্ণ বিচার প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়েছে। বদলে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবার তাদের ওই অভিযুক্ত তিন আইএএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বিচার প্রস্তাবই পাঠাতে হবে। তাতে থাকতে হবে - যুক্তসঙ্গত প্রস্তাব, এফআইআর-এর বৈধ প্রতিলিপি-সহ ডিভিডি, ডিসক্লোজার স্টেটমেন্ট, সাক্ষীদের বয়ান, অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের লিখিত বয়ান ও তদন্তকারী আধিকারিকের মতামত এবং মন্তব্য, আইন বিভাগের সম্মতিপত্র।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই) এই মামলার তদন্ত করেছে। এবং মামলাটি জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের সাধারণ প্রশাসন বিভাগ বা গ্যাড এই মামলা নিয়ে তার মতামত কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছিল একটি স্টেটাস রিপোর্টের মাধ্যমে। যেটিতে উল্লেখিত তারিখ ছিল - গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। এই প্রসঙ্গে করা সংশ্লিষ্ট জনস্বার্থ মামলাটি রুজু করা হয়েছিল শেখ মহম্মদ শাফি ও অন্য়রা বনাম ভারত সরকার ও অন্যদের মধ্যে। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, তারা যা জানানোর সেটা জানিয়ে দিল। এবার কেন্দ্রীয় সরকারের যা চূড়ান্ত পদক্ষেপ করার, তা তারা করুক। ওই একই স্ট্য়াটাস রিপোর্টে পি কে পোলে নামে আরও এক আইএএস আধিকারিকের সম্পর্কেও মতামত দেওয়া হয়।
এই গোটা ঘটনায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁকে জানানো হয়, এম রাজু এবং প্রসন্ন রামাস্বামী জি নামে দুই আইএএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তাব দিয়েছে সিবিআই। তার জন্য লাদাখের লেফটেন্য়ান্ট গভর্নরের সম্মতি সাপেক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বিষয়টি বিবেচনার জন্য পাঠানো যেতে পারে।
এরই মধ্য়েই গত ৮ মার্চ এই ঘটনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চকেও তথ্য দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারা জানিয়ে দিয়েছে, তিনজন আইএএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে পেশ করা অসম্পূর্ণ বিচার প্রস্তাব জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২০ মার্চ।
প্রসঙ্গত, সিবিআই-এর অভিযোগ, ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্য়ে প্রায় ১.৫৩ লক্ষ হাতিয়ারের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছিল জম্মু ডিভিশনের ১০টি জেলার জন্য। এবং প্রায় ১.২১ লক্ষ অস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছিল কাশ্মীর ডিভিশনের ১২টি জেলার জন্য। অভিযোগ, তৎকালীন জেলাশাসকরা অসাধুভাবে টাকার বিনিময়ে এই কাজ করেছিলেন। এর জন্য সব মিলিয়ে মোট ন'জন আইএএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে সিবিআই।