শিশির গুপ্ত
দুইবছর আগে এই দিনেই উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে পাকড়াও করেছিল পাকিস্তান। তাঁর রক্তাক্ত শরীরের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়ে পাকিস্তান। আদৌ তাঁকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যাবে সেটা জানা ছিল না। সেই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর কথায় Research and Analysis Wing (RAW)-এর তৎকালীন প্রধান পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রধানকে ফোন করেন। অভিনন্দনের খারাপ কিছু ঘটলে পাকিস্তানকে যে ছাড়া হবে না, সেটা সাফ করে দেন তিনি।
বালাকোট হানার প্রত্যাঘাতের জন্য পাকিস্তানের বেশ কিছু প্লেন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। সেগুলিকে আটকায় ভারতের মিগ-২১। পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ গুলি করে নামিয়ে দিতে সক্ষম হন অভিনন্দন। কিন্তু তার মিগ এসে নামে রাক অধিকৃত কাশ্মীরে। সেখানে গ্রামবাসী তাঁকে পাকিস্তান সেনার হাতে তুলে দেয়।
প্রাক্তন বায়ুসেনার অফিসার, গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলে কিছু তথ্য জানতে পেরেছে হিন্দুস্তান টাইমস যেটা থেকে বোঝা যায় কী পরিস্থিতিতে অভিনন্দনকে ছাড়তে বাধ্য হয় ইমরান খান।
জানা গিয়েছে অভিনন্দনের ছবি প্রকাশ করার পরেই তাঁকে ছাড়ানোর জন্য সক্রিয় হয়ে ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদী আহত অভিনন্দনের ছবি দেখে অত্যন্ত ব্য়থিত হন এবং তখনই র-এর প্রধানকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিতে বলেন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল যে আমাদের অস্ত্রভাণ্ডার দীপাবলীর জন্য তুলে রাখা হয়নি।
র-এর প্রধান তখন আইএসআই প্রধানকে ফোন করে এই কথা জানান। তাঁর স্পষ্টবচনে একেবারে সচকিত হয়ে যান আইএসআই প্রধান লেফট্যানেন্ট জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির আহমেদ শাহ। যদি কিছু অভিনন্দনের হয়, তার পর যা হবে সেটার দায় ইসলামাবাদের ওপর বর্তাবে, স্পষ্ট ভাবে বলে দেওয়া হয়।
এই বিষয়টি যে ভারত হাল্কা ভাবে নেবে না, সেটা বোঝাতে সেনা পৃথ্বী মিসাইল প্রস্তুত করে রেখেছিল রাজস্থানে। এতে একেবারে ওয়াশিংটনে পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়ায়। জাতীয় সংসদে অভিনন্দনকে ছাড়ার কথা বলে ইমরান বলেন যে তিনি মোদীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু সংযোগ হয়নি। শান্তির জন্যেই অভিনন্দনকে ছাড়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। তবে ভারত আগেই জানতে পেরেছিল যে অভিনন্দনকে ছাড়া হচ্ছে। হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে যে ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে আইএসআই প্রধান গোপন চিঠি লেখেন RAW প্রধানকে যে অভিনন্দনকে ছাড়া হচ্ছে। সেই চিঠির কথা মোদীকে জানানো হয়। প্রসঙ্গত, মাত্র আট মাস কাজের পরেই আইএসআই প্রধানকে জুন ২০১৯ সালে সরিয়ে দেয় পাকিস্তান। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন কট্টরপন্থী ফৈয়জ আহমেদ।