পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে বিদ্রোহীদের হামলার অবসান হয়েছে, কারণ দিনভর 'পূর্ণমাত্রায়' উদ্ধার অভিযানের পর সব জঙ্গি নিহত হয়েছে।
বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) বিদ্রোহীদের দাবি তারা মঙ্গলবার বোলান জেলার কাছে পেশোয়ারগামী ট্রেন থেকে আরও ৫০ পণবন্দিকে হত্যা করেছে। এই প্রতিবেদন দাখিল করার সময় নিহত পণবন্দির সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে বলেছে, 'আজ শত্রু বাহিনী ভারী আর্টিলারি ও অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে সশস্ত্র অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। পাকিস্তানের ক্রমাগত আগ্রাসনের সরাসরি প্রতিশোধ হিসেবে বিএলএ গত এক ঘণ্টায় ৫০ জন অতিরিক্ত পণবন্দিকে হত্যা করেছে।
বালুচিস্তান প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি প্রাদেশিক পরিষদে ভাষণ দেওয়ার সময় কিছু পণবন্দি নিহত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমাদের লোকজনও শহিদ হয়েছেন, তবে বিস্তারিত পরে জানাব।
নিরাপত্তা বাহিনী এ পর্যন্ত বন্দুকধারীদের হাতে আটক ৩০০ জনেরও বেশি পণবন্দিকে উদ্ধার করেছে, তবে বন্দিদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বুধবার বিস্ফোরক বোঝাই জ্যাকেট পরা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা বন্দি যাত্রীদের কাছে বসেছিল বলে জানা গেছে। সরকার কোয়েটা রেলস্টেশনে খালি কোষাগার পরিবহন করে সম্ভাব্য হতাহতের জন্যও প্রস্তুত ছিল।
মঙ্গলবার জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে রেললাইন উড়িয়ে দিয়ে গুলি চালায় জঙ্গিরা। গুলির মুখে পড়ে সশস্ত্র ব্যক্তিরা নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের পর ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সেই সময় চালক গুলিবিদ্ধ হন।
এর আগে বুধবার বাকি পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য পাকিস্তান সরকারের কাছে মূল দাবি জানায় জঙ্গিরা। বিএলএ'র মুখপাত্র জিয়ান্দ বালুচ বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি কেন্দ্রীয় সরকার ও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক 'সন্ত্রাসী' সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত সংগঠনটির কারাবন্দী জঙ্গিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়, তাহলে তারা যাত্রীদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত। অতীতে এ ধরনের আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান হওয়ায় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানের কৌশলগত মিত্র চিন ট্রেন হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে যে তারা দৃঢ়ভাবে যে কোনও ধরণের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে।
চিনের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'আমরা এসব প্রতিবেদন লক্ষ্য করেছি এবং এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। ইসলামাবাদের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা জোরদার করতেও প্রস্তুত বেইজিং।
(রয়টার্স অবলম্বনে)