রাহুল ওরফে ভোলু। তবলাবাদক সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়কে খুনের অভিযোগ রাহুলের বিরুদ্ধে। অন্য মামলায় গুজরাট থেকে রাহুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে ধৃতকে জেরা করে যে সমস্ত তথ্য় মিলছে তা চমকপ্রদ।
এবার প্রশ্ন গত কয়েক মাসে রাহুল ঠিক কতগুলি খুন করেছে? পাঁচটি নাকি আরও বেশি খুন করেছে রাহুল?
এই প্রশ্নটা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও। রাজ্য পুলিশের একটি টিম গিয়েছিল গুজরাটে। এদিকে এই রাহুল বেশিরভাগ সময়েই বিশেষভালে সক্ষমদের জন্য নির্দিষ্ট কামরায় যাতায়াত করত। তার নিজেরও পায়ের কিছুটা সমস্যা রয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, ধৃতকে জেরা করে জানা গিয়েছে, গত ২০শে অক্টোবর থেকে ২৪ শে নভেম্বরের মধ্যে সে অন্তত পাঁচটা খুন করেছে। যার মধ্যে চারজনই তরুণী।
কাকে কাকে খুন করেছিল রাহুল?
সূত্রের খবর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্রেনে খুন করেছিল ওই ব্যক্তি। ২০শে অক্টোবর মহারাষ্ট্রের শোলাপুরে পুনে কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসে এক মহিলাকে খুন করা হয়েছিল। যৌন নির্যাতনের পরে খুন করা হয়েছিল তাঁকে। এরপর কর্ণাটকে বেঙ্গালুরু-মুরুদেশ্বরগামী ট্রেনে খুন করেছিল একজনকে। এখানেই শেষ নয়। ১৪ নভেম্বর গুজরাটের উর্বরাতে এক তরুণীকে খুন ও যৌন নির্যাতন করা হয়েছিল। এরপর সে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপরের ঘটনা হাওড়ামুখী ডাউন কাটিহার এক্সপ্রেস। এবার টার্গেট সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়।
বিশেষভাবে সক্ষমদের কামরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল তবলাবাদকের দেহ। ট্রেনটি হাওড়া স্টেশনে যাওয়ার পরে তার দেহ উদ্ধার করে রেলপুলিশ। তবে ঠিক কোন স্টেশনের আগে সৌমিত্রকে খুন করা হয়েছিল তা নিয়ে নির্দিষ্টভাবে রাহুল বলতে পারেনি।
এদিকে জেরায় সে জানিয়েছে ওই দিন কামরায় তবলাবাদক ও রাহুল ছাড়া কামরায় আর কেউ ছিল না। এমনকী বাইরে থেকে কেউ যাতে দেখে না ফেলে সেকারণে দরজা জানালা সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে ঠিক কোন স্টেশনে সে নেমে গিয়েছিল তা নিয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু সে জানায়নি।
সম্ভবত সে বুঝতে পারেনি কোন স্টেশনে সে নেমেছিল। এদিকে খুনের কারণ নিয়ে সে একেক সময় এক একটা কারণের কথা বলছে।
এদিকে সৌমিত্রর ফোন মিলেছিল রাহুলের কাছ থেকে। গুজরাটে ওই সিরিয়াল কিলারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল সৌমিত্রর মোবাইল। ওই ধৃতের নাম রাহুল ওরফে ভোলু। কিন্তু মৃত তবলাবাদকের মোবাইল কীভাবে গেল রাহুলের কাছে? সে কি খুনের ঘটনায় জড়িত? কেন খুন করল সে? কীভাবে ফোনের খোঁজ পেল পুলিশ?
পুলিশ সৌমিত্রর মোবাইল ট্র্য়াক করা শুরু করেছিল। মোবাইলটির অবস্থান দেখা যাচ্ছিল রেলওয়ের ট্র্যাক বরাবর। শেষবার সালেমে ছিল ফোনটি। কিন্তু তারপরে ফোন সুইচড অফ হয়ে যায়। এরপর সেটা কীভাবে গুজরাটে গেল সেটা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ সেটাই মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। হাওড়া জিআরপি, সিআইডি তদন্ত করছিল। মোবাইলের সূত্র ধরেই তদন্ত করছিল পুলিশ। এদিকে সেই মোবাইল ফোন উদ্ধার রাহুলের কাছে। এদিকে পুলিশ জানতে পারে, মোবাইলটির অবস্থান জানা যায় তামিলনাড়ুতে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাহুল ট্রেনে ঘুরছিল। এরপর অন্য একটা মামলায় গুজরাট পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।