ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পর তখন কংগ্রেসের অন্দরে টালমাটাল পরিস্থিতি। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পাহাড়–সমান অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতার লাগাম ছিনিয়ে নেয় ইন্দিরা–তনয় রাজীব গান্ধী। স্বাভাবিকভাবেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন প্রণববাবু। সেই জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করে পাঠানো হয় তাঁকে। প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্য দাবিদার প্রণব মুখোপাধ্যায়কে কিছু সময়ের জন্য কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল।
নিজের রাজ্যে ফিরে ১৯৮৬ সালে নতুন দল গঠন করেন ‘আহত’ প্রণব মুখোপাধ্যায়। নাম দেন রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস। পরের বছর ১৯৮৭ সালে বিধানসভা নির্বাচন। বহু আসনে রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেসের প্রার্থীও দাঁড় করিয়ছিলেন প্রণববাবু। কিন্তু তাঁদের একজনও জিততে পারেননি। কিন্তু কংগ্রেসের ভোট কাটতে সক্ষম হয়েছিলেন ওই প্রার্থীরা। কয়েক ডজন আসনে প্রণববাবুর দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট কমে যাওয়ায় হারতে হয়েছিল কংগ্রেস প্রার্থীদের।
কিন্তু নিজের হাতে তৈরি করা দল বেশিদিন রাখতে পারেননি প্রণব মুখোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের দলে আনতে না পারায় নির্বাচনে হারতে হয় রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেসকে। শেষে ১৯৮৯ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যায় এই দল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর প্রথম এবং প্রধান কারণ ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায় নিজেই। কারণ তিনি কোনওদিনই জননেতা ছিলেন না এবং সেই সময় কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। সমস্ত মতানৈক্য মিটমাট করে কংগ্রেসে ফেরেন প্রণববাবু। তখনও দলের শীর্ষ নেতা হিসেবেই গণ্য হন তিনি।