কোভিডের পরে কি ফের নয়া মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে চিন থেকে? হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (hMPV) নিয়ে আচমকাই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পাঁচ বছর আগে যে ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল, আবার সেরকম কিছু হবে কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন নেটিজেনদের একাংশ। নয়া বছরের শুরুতেই ভয় গ্রাস করেছে তাঁদের। সেই পুরনো দিনগুলোর কথা ভেবে আঁতকে উঠছেন। চিনকে তো রীতিমতো শাপ-শাপান্ত করতে শুরু করে দিয়েছেন কেউ-কেউ। যদিও মহামারী বিশেষজ্ঞ পর্ণালী ধর চৌধুরী সাফ জানিয়েছেন, হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কোনও দরকার নেই। hMPV নেহাতই একটা সাধারণ ভাইরাস। যার দাপট সাধারণত বৃদ্ধি পায় শীতকাল এবং বসন্তের শুরুতে। শিশুদের ক্ষেত্রে একেবারেই সাধারণ বিষয়টা। ফলে অকারণে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মহামারী বিশেষজ্ঞ।
'হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি হয়'
একইভাবে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের 'ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল'-র (এনসিডিসি) বিশেষজ্ঞরা। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য পরিষেবার ডিরেক্টর জেনারেল অতুল গোয়েল জানিয়েছেন যে আর পাঁচটা শ্বাসনালীর সংক্রমণকারী ভাইরাসের মতোই হল হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস। যে ভাইরাসের কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি হয়ে থাকে। আর শিশুদের ক্ষেত্রে ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
ভারতে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, আশ্বাস কেন্দ্রের
তিনি বলেছেন, ‘চিনে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস দাপাচ্ছে বলে খবর ছড়াচ্ছে। তবে দেশে (ভারত) শ্বাসনালীর সংক্রমণকারী ভাইরাসের সংক্রমণ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখেছি আমরা। আর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান তেমন কিছু বাড়েনি। আমাদের কোনও প্রতিষ্ঠান থেকেই প্রচুর আক্রান্তের খবর মেলেনি। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
স্বাস্থ্য পরিষেবার ডিরেক্টর জেনারেল আরও জানিয়েছেন, শীতকালে সাধারণত শ্বাসনালীর সংক্রমণকারী ভাইরাসের দাপট কিছুটা বৃদ্ধি পায়। আর সেটা সামলাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতাল যথেষ্ট প্রস্তুত থাকে। পর্যাপ্ত শয্যা এবং জোগানের বন্দোবস্ত থাকে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য পরিষেবার ডিরেক্টর জেনারেল।
আরও পড়ুন: HT Bangla 5 Years: কোভিড-স্তম্ভনে বশীভূত জগতেও শেষমেশ জীবনের জয়গান, যা দিয়ে গেল এই মহা-দুঃস্বপ্ন
কী কী পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র?
সেইইসঙ্গে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে শ্বাসনালীর সংক্রমণ রুখতে যেমন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়, সেরকম যেন নেন সাধারণ মানুষ। অর্থাৎ কারও যদি সর্দি-কাশি হয়, তাহলে তাঁকে তিনি যেন অপরজনের সংস্পর্শে না আসেন, যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে। জ্বর-সর্দি হলে সাধারণ ওষুধপত্র খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর সেই মরশুমি ইনফ্লুয়েঞ্জার উপরে নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন 'ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল'-র (এনসিডিসি) বিশেষজ্ঞরা।