কাজ নেই, চরম দারিদ্র। আর তখনই আসে রঙিন জীবনের হাতছানি। তারপর একদিন ঘর ছেড়়ে পাড়ি দেওয়া একটু ভালো ভাবে বাঁচার লক্ষ্যে। কিন্তু বাস্তবে এভাবেই পাচারের অন্ধ গলিতে হারিয়ে যায় স্বপ্নে ভরা একটা করে জীবন। এই যেমন ২০২০ সালের মে মাস। অসমের কোকড়াঝাড় থেকে পাচার হয়ে গিয়েছিল ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী। পরে জানা যায় শিলিগুড়ির নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে তাকে। পরে অবশ্য় উদ্ধার করা হয় তাকে। তদন্তে জানা যায় বঙ্গাইগাঁওয়ের এক পোলট্রি ব্যবসায়ী সোশ্য়াল মিডিয়ার মাধ্যমে তার সঙ্গে আলাপ জমায়। পরে তাকে পাচার করে দেওয়া হয়।
এদিকে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, অতিমারির মধ্যেই অসম থেকে নারী পাচারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর মতে, ২০১৮ সালে অসমে মানব পাচারের সংখ্যা ছিল ৩০৮। মহারাষ্ট্রের পরেই তার স্থান। ২০১৯ এ হল ২০১ জন, ২০২০তে হল ১২৪জন। কোকড়াঝাড়ের একটি এনজিওর চেয়ারপার্সন দিগম্বর নার্জারি বলেন, গত বছর শুধু বোড়ো টেরিটোরিয়াল রিজিয়নের চারটি জেলাতেই ১৫৬টি শিশু পাচারের ঘটনা হয়েছে। যদি সব তথ্য পাওয়া যায় তবে গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ।
কিন্তু কেন এই পাচার বাড়ছে? নার্জারির দাবি, স্কুল বন্ধ। বোর্ডের পরীক্ষা হওয়ার পরেও নতুন করে ভর্তির সুযোগ নেই। ভিনরাজ্যে কাজ হারিয়ে হাজার হাজার মানুষ ফিরে এসেছেন। কাজ হারিয়ে বহু পরিবারে ছেলেমেয়েদের পড়ানোর মতো আর্থিক পরিস্থিতি নেই। এর জেরে পাচারের অন্ধগলিতে হারিয়ে যাচ্ছে অসমের অনেকে।
নার্জারি বলেন, ধুবরির একটি মেয়েকে রাজস্থানে বিক্রি করা হয়েছিল। তার কন্যা সন্তান হওয়ার পরে ফের তাকে বিক্রি করা হয়। সেখানে কন্যা সন্তান হওয়ার পরে ফের বিক্রি করে দেওয়া হয় তাকে। আজমের থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা হয়।