হায়দরাবাদ এনকাউন্টারের তদন্তের জন্য কমিশন গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি ভিএস সিরপুরকারের নেতৃত্বাধীন এই কমিটিতে অন্য সদস্যরা হলেন প্রাক্তন বম্বে হাই কোর্ট বিচারপতি রেখা বালদোতা ও প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর ডিআর কার্তিকেয়ান। কোন পরিস্থিতিতে হায়দরাবাদ খুন-ধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্তদের এনকাউন্টার করতে হয়েছিল, সেটাই খতিয়ে দেখবে এই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
এদিন এই মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি বোবডের বেঞ্চ বলেন যে ছয় মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে হবে কমিশনকে। কমিশনের শুনানি হবে হায়দরাবাদ। কমিশনের চেয়ারম্যান ঠিক করবেন কবে থেকে কাজ শুরু হবে। হায়দরাবাদে চার অভিযুক্তকে হত্যা করার বিষয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও তেলাঙ্গানা হাইকোর্ট যে আলাদা করে তদন্ত করছিল, সেগুলি এদিন মুলতুবি রাখার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
ডিসেম্বরের ৬ তারিখ ভোররাতে পুলিশের হাতে মারা যায় চার অভিযুক্ত। যেখানে পশু চিকিত্সকের খুন ও ধর্ষণ করা হয়েছিল, সেখানে অভিযুক্তদের নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানেই অভিযুক্তরা পালাতে যাওয়ায় তাদের এনকাউন্টার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
এদিন তেলেঙ্গানা সরকারের কৌঁসুলী মুকুল রোহাতগিকে অনেক প্রশ্ন করে সুপ্রিম কোর্ট এই এনকাউন্টার সম্বন্ধে। এরপর আদালত বলে যে এর নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।
প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞেস করেন যে ক্রাইম সিনে কেন গুলি ভর্তুক বন্দুক নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশরা। পুলিশের বয়ান অনুযায়ী তাদের রাইফেল ছিনিয়ে নিয়েছিল অভিযুক্তরা। আবার পুলিশ জানিয়েছে যে অভিযুক্তরা তাঁদের দিকে পাথর ছুঁড়েছিল। বন্দুক থাকা সত্বেও অভিযুক্তরা পাথর কেন ছুঁড়ল, সেই প্রশ্নও তোলেন প্রধান বিচারপতি। চার অভিযুক্তের এর আগের কোনও অপরাধের রেকর্ড আছে কিনা, সেটাও জিজ্ঞেস করেন তিনি। আহত পুলিশকর্মীদের মেডিক্যাল রিপোর্টও দেখতে চান তিনি।
পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা, সেটাও জানতে চান প্রধান বিচারপতি। নেতিবাচক উত্তর পেয়ে তিনি বলেন যে সত্যিটা প্রকাশ করা উচিত। রাজ্য সরকারের তদন্তে বাধা দেওয়া উচিত না বলেও জানান বিচারপতি বোবডে।
বিচারের যাতে প্রহসন না হয়, সেই বিষয়কে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দেন তিনি। রাজ্য সরকারের তদন্তের ওপরে ভরসা না রেখে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিশন বেঞ্চ।