কাজ না করেও সরকারের কাছে অবসরকালীন ভাতা ও বকেয়া বেতন চাইলেন স্বয়ং ‘বিষ্ণুর দশম অবতার’! শুধু তাই নয়, তিনি যে দেবতা, তা বিভাগীয় প্রধানকে জানাতে খসখসিয়ে লিখে ফেললেন চিঠিও। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। হুমকিও দিয়েছেন। অবসরকালীন ভাতা ও বকেয়া বেতন না-দেওয়া হলে, তাঁর ‘অভিশাপে’ গোটা বিশ্বে খরা নেমে আসবে।
এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর এমনই অদ্ভুত দাবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গুজরাতে। অবসরকালীন ভাতা না পেয়ে তিনি নিজেকে বিষ্ণুর শেষ অবতার দাবি করে বসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি ‘বিষ্ণুর কালকি অবতার’! এখানেই শেষ নয়, তিনি হুমকিও দিয়েছেন যে, তাঁকে যদি অবসরকালীন ভাতা না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি দিয়ে গোটা বিশ্বে ‘খরা’ এনে দেবেন।
গুজরাতের জলসম্পদ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মীর নাম রমেশচন্দ্র ফেফার। তাঁকে সর্দার সরোবর পুনর্বাসন এজেন্সিতে সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়র পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। এই দফতর নর্মদা বাঁধ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পুনর্বাসন ও পুনর্বাসনের তদারকির দায়িত্বে রয়েছে। আট মাসে মাত্র ১৬ দিন অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁকে ২০১৮ সালে শো-কজ নোটিস দেওয়া হয়েছিল।
তখনও তিনি একই ধরনের দাবি করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি কাজের সময় অফিসে যেতেন না। দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাঁকে দফতর থেকে স্বেচ্ছা অবসর দিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর অকাল অবসরের জন্য গ্র্যাচুইটি আটকে গিয়েছিল। এখন কাজ না করেও তিনি বেতন চাইছেন বলে অভিযোগ। পয়লা জুলাই রমেশবাবু জলসম্পদ বিভাগের সচিবকে সম্বোধন করে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতে রমেশ লিখেছেন, ‘ সরকারে বসে রাক্ষস তাঁর গ্র্যাটুইটির ১৬ লক্ষ টাকা ও বেতনের আরও ১৬ লক্ষ টাকা আটকে রেখে তাঁকে হয়রানি করছে।’ তাঁকে হয়রানির প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে তিনি ভয়াবহ খরা নিয়ে আসবেন। কারণ, তিনি ভগবান বিষ্ণুর দশম অবতার!’ তিনি এও লিখেছেন যে, হিন্দু ধর্ম অনুয়ায়ী, মানব দেবতা যাঁরা সত্যযুগে শাসন করেন, তাঁদের মধ্যে তিনিও রয়েছেন।’ তিনি দাবি করেছেন, যেহেতু তিনি বিষ্ণুর দশম অবতার, আর বৃষ্টি আনতে কাজ করেছিলেন, তাই তাঁকে বেতন দেওয়া উচিত।
জলসম্পদ বিভাগের সচিব এম কে যাদব এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘ ওনার চিঠি আমি পেয়েছি। তিনি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক দাবি করেছেন। তাঁর গ্র্যাচুইটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি গতবারও একই দাবি করেছিলেন। সেজন্য তদন্তও হয়েছিল। সাধারণত তদন্ত হলে কেউ অকাল অবসর পান না। কিন্তু সেই তদন্তের রিপোর্টে তাঁর মানসিক অবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে তাঁকে অকাল অবসর দেওয়া হয়েছিল।’