নরেন্দ্র মোদীর সরকারে ইডি, সিবিআই সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ বারবার উঠেছে। শুধু তাই নয়, ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্যতম মূল ভিত্তি হল বিচারব্যবস্থা, অথচ সেই বিচারব্যবস্থাকেও কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে বহুবার। তবে এসবের পরেও সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তৃতীয়বার সরকার গড়তে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। ঠিক সেই আবহে বিচারব্যবস্থা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
আরও পড়ুন: CBI-র মতো এজেন্সিগুলিকে মামুলি মামলার তদন্তে নামানো হচ্ছে, মত CJI চন্দ্রচূড়ের
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান বিচারপতি। সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে একজন প্রশ্ন করেন একটি ভালো সমাজের ভবিষ্যত কী হওয়া উচিত? তার উত্তরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একটি গণতন্ত্রে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখানে আমরা ঐতিহ্যের চেতনাকে প্রতিফলিত করি।’
এরপরেই বিচার বিভাগে রাজনৈতিক চাপ নিয়ে একজন প্রশ্ন করলে প্রধান বিচারপতি জানান, ‘বিচারপতি হিসাবে আমার ২৪ বছরের কর্মজীবনে আমি কখনই কোনও রাজনৈতিক চাপের সম্মুখীন হইনি। আমাদের জীবন সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে বিচ্ছিন্ন। তবে বিচারপতিদের অবশ্যই তাঁদের রায় দেওয়ার আগে বৃহত্তর রাজনীতিতে প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।’ তাঁর কথায়, এটা রাজনৈতিক চাপ নয়, আদালতের যেকোনও সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাব বোঝা।
তিনি বিচার ব্যবস্থায় আরও স্বচ্ছতা আনতে প্রযুক্তির ভূমিকা তুলে ধরেন। প্রধান বিচারপতি জোর দেন, প্রযুক্তির সামগ্রিক প্রভাব বিচার বিভাগকে সমাজের বৃহত্তর অংশে পৌঁছতে সহায়তা করে। ভারতের সাধারণ নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সাংবিধানিক গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি।’
একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘ভারতে বিচারপতিরা নির্বাচিত হন না । যোগ্যতার ভিত্তিতে এই পদে আসেন। তাঁদের কাজ হল সাংবিধানিক মূল্যবোধকে রক্ষা করা। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, বিচার বিভাগ হল ন্যায়বিচারের একটি হাতিয়ার, যা সমাজে শৃঙ্খলা ও নিশ্চয়তা নিয়ে আসে, বিচারের মাধ্যমে সমাজে অমানবিক প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
তাঁর কাছে ভারতে সমলিঙ্গের মধ্যে বিবাহকে বৈধতা দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। সে প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ভারতে বিয়ে একাধিক আইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাই পার্লামেন্টের এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই ভালো।’