গোটা দশে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গডকড়ি একটি বড় মন্তব্য সামনে এল। তিনি স্পষ্টভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন যে তিনি সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সড়ক দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও আসলে তা সম্ভব হয়নি, বরঞ্চ পথ দুর্ঘটনা আরও বেড়েছে। আর এই কারণে যেকোনও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গিয়ে তিনি মুখ লুকানোর চেষ্টা করেন। হালে লোকসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিজেপিতে কেউ আমায় প্রধানমন্ত্রী হতে বলবে না, সোজাসাপটা কথা নীতীন গডকড়ির
সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে লোকসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় গডকড়ি বলেন, ‘দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানোর কথা ভুলে যান, এটা যে বেড়েছে তা স্বীকার করতে আমার কোনও দ্বিধা নেই। আমি যখন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে যাই যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়, আমি মুখ লুকানোর চেষ্টা করি।’ লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য মানুষের আচরণ পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি রাস্তার নিরাপত্তার জন্য মানুষের আচরণের পাশাপাশি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আইনের শাসনের প্রতি সম্মান দেখানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এপ্রসঙ্গে তিনি যে নিজেও দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন সেই কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, বেশ কয়েক বছর আগে সপরিবারে যাওয়ার সময় তিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। যার জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ ভগবানের দয়ায় আমি ও আমার পরিবার রক্ষা পেয়েছি। তাই দুর্ঘটনার আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে।’
ট্রাকের অবৈধ পার্কিং পথ দুর্ঘটনার মূল কারণগুলির একটি বলে মনে করেন নীতীন গডকড়ি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাস্তায় এলোমেলোভাবে ট্রাক দাঁড় করায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার সময় বাস থেকে যাত্রীরা যাতে সহজেই বেরিয়ে আসতে পারেন তার জন্য বাস আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করা উচিত।
গোটা দেশের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তথ্য উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ১.৭৮ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারায়। এরমধ্যে ৬০ শতাংশ মৃতের বয়স ১৮ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে। আর রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে উত্তরপ্রদেশ। এখানে মোট সড়ক দুর্ঘটনায় বার্ষিক মৃত্যুর সংখ্যা ২৩ হাজারের বেশি। তামিলনাড়ুতে ১৮,০০০, মহারাষ্ট্রে ১৫,০০০ এবং মধ্যপ্রদেশে সংখ্যা হল ১৩,০০০ জন। শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দিল্লিতে। এরপরেই রয়েছে বেঙ্গালুরু এবং তারপরে জয়পুর।