সহকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা ভারতীয় বায়ুসেনার মহিলা অফিসারকে পোহাতে 'টু ফিঙ্গার টেস্টে'র যন্ত্রণা। উল্লেখ্য, ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে 'টু ফিঙ্গার টেস্ট' নিষিদ্ধ করেছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এদিকে শুধু তাই নয়, নির্যাতিতার অভিযোগ, ধর্ষণের পর থেকেই তাঁকে বিভিন্ন ভাবে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি তাঁর কাছে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বলে জানান অভিযোগকারিণী।
নির্যাতিতা জানান যে ঘটনাটি ঘটার ১০ দিন পর্যন্ত কলেজ কমান্ড্যান্ট বা কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি, বরং তাঁকে ভুল পথে চালিত করা হয়েছে। এরপরই তিনি মহিলা পুলিশ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অমিতেশ হরমুখের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, গত ৯ সেপ্টেম্বর অফিসার্স মেসে একটি পার্টিতে যান নির্যাতিতা এবং অভিযুক্ত। পার্টিতে দুটি ড্রিঙ্ক সেবন করেন তিনি। তার একটি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত অফিসার। সন্দেহ প্রকাশ করা হয় তাতে মাদক মেশানো ছিল। পরে বেহুশ হয়ে পড়েন। অবচেতন অবস্থায় তিনি বুঝতে পারেন যে তাঁকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতেই তিনি বহুবার অভিযুক্তকে ছেড়ে দিতে বলেন। তা সত্ত্বেও সহকর্মী তাঁকে ধর্ষণ করে। অভিযোগকারিণীর এর ব্যাচমেটও পুরো বিষয়টি জানেন।
পরের দিন অভিযুক্তকে এই বিষয়ে মুখোমুখি প্রশ করেন নির্যাতিতা। তাতে অভিযুক্ত দোষ মেনে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁর স্বীকারোক্তি ভিডিয়ো রেকর্ড করেন নির্যাতিতার ব্যাচমেট। তবে অভিযোগ জানাতে গেলে নানা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয় নির্যাতিতা অফিসারকে।
নির্যাতিতাকে 'ভবিষ্যতের কথা' ভেবে অভিযোগ তুলে নিতে বলেন ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা। এরপর তাঁর যৌনাঙ্গে টু ফিঙ্গার টেস্ট করা হয়। এমনকী যে মাদুরের উপর বীর্যের দাগ লেগেছিল সেটাও দুই মহিলা ডাক্তারকে দেন নির্যাতিতা। যৌনাঙ্গ পরীক্ষার পর দুই শীর্ষ অফিসার তাঁকে জানান, টেস্ট নেগেটিভ এসেছে এবং তিনি যেন অভিযোগ প্রত্যাহার করেন। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর পুলিশ কমিশনার এবং মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। যদিও বায়ুসেনার দাবি, এই ঘটনার তদন্ত তারা করবে। যদিও পুলিশের দাবি, বায়ুসেনার থেকে সাহায্য না পেয়েই পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তাই তদন্তভার তাদের। বর্তমানে অভিযুক্ত বিচার বিভআগীয় হেফাজতে আছেন।