নির্দিষ্ট 'স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর' অনুসরণ করা হয়নি। 'কোর্ট অফ এনকোয়ারি'-তে দোষ প্রমাণিত হয়েছে। সেজন্য দুর্ঘটনাবশত পাকিস্তানে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার ঘটনায় তিন অফিসারকে বরখাস্ত করল ভারতীয় বায়ুসেনা। তবে তাঁদের পরিচয় বা পদমর্যাদার বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
মঙ্গলবার ভারতীয় বায়ুসেনার এক মুখপাত্র বলেছেন, 'ওই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে তিনজন দোষী বলে বিবেচিত হয়েছে। তাঁদের সার্ভিস থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ তাঁদের বরখাস্তের নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।' ওই বরখাস্ত অফিসারদের পদমর্যাদার বিষয়ে কিছু জানানো না হলেও হিন্দুস্তান টাইমস আগেই জানিয়েছিল, সেই ঘটনায় এক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং কয়েকটি উইং কমান্ডার/স্কোয়াড্রন লিডারের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পাকিস্তানে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার ঘটনা ঠিক কী হয়েছিল?
গত ৯ মার্চ ভারত থেকে একটি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানে গিয়ে পড়েছিল। সেইসময় পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর এক সদস্যকে উদ্ধৃত করে রাশিয়ার সংবাদসংস্থা স্পুটনিকে বলা হয়েছিল, ‘সন্ধ্যা ৬টা ৪৩ মিনিটে পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের এয়ার ডিফেন্স অপারেশন সেন্টার লক্ষ্য করে যে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে একটি উচ্চগতির বস্তু আকাশে উড়েছে। প্রাথমিক গতিপথ থেকে সরে গিয়ে বস্তুটি হঠাৎ করে পাকিস্তানি ভূখণ্ডের দিকে চলে যায় এবং পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। অবশেষে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে মিয়া চান্নুর কাছাকাছি চলে আসে সেটি।’ পাকিস্তানি সেনার দাবি তরফে দাবি করা হয়েছিল, ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘আর্মড’ ছিল না। অর্থাত্ হামলা চালানোর উদ্দেশে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: পাক ভূখণ্ডে ভারতীয় ব্রহ্মোস মিসাইল উড়ে যাওয়ার ঘটনায় দায়ী একাধিক IAF অফিসার : রিপোর্ট
সেই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল ভারত। সংসদে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেইসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, 'গত ৯ মার্চ রুটিন রক্ষণাবেক্ষণের সময় যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে ভুলবশত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে ভারত সরকার। উচ্চপর্যায়ের কোর্ট অফ এনকোয়ারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের একটি জায়গায় সেই ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনা গভীরভাবে দুঃখজনক হলেও বিষয়টি অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক যে দুর্ঘটনার জন্য কোনও প্রাণহানি হয়নি।'
তদন্তের পর মঙ্গলবার বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনায় কী হয়েছিল এবং কাদের ভুলে এরকম হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখতে 'কোর্ট অফ এনকোয়ারি' গঠন করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে যে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অপারেটর প্রসিডিওর ঠিকমতো পালন করা হয়নি। তার জেরেই দুর্ঘটনাবশত ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফায়ার’ হয়েছিল।