‘কড়া ডোজের’ পর 'অ্যাল্যোপ্যাথি ওষুধ' নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহার করেছিলেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই অ্যাল্যোপ্যাথি ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুললেন যোগগুরু রামদেব। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) এবং ওষুধ সংস্থাগুলির উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়লেন, 'অ্যালোপাথি যদি সর্বশক্তিমান এবং সর্বগুণ সম্পন্ন হয়, তাহলে অ্যালোপাথির চিকিৎসকদের অসুস্থ হওয়ার কথা নয়?'
সোমবার টুইটারে ২৫ টি প্রশ্ন পোস্ট করেন রামদেব। প্রশ্ন করেন, ‘থাইরয়েড, কোলাইটিস এবং অ্যাসমার জন্য ওষুধ সংস্থাগুলির কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা আছে?’ লিভার সিরোসিসের মতো রোগের চিকিৎসা আছে কিনা, জানতে চান রামদেব। জানতে চান, অ্যালোপাথি চিকিৎসা পদ্ধতির কাছে বয়স কমানোর, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানো, বন্ধ্যাত্বের মতো বিষয়ের কোনও উত্তর আছে কিনা। বলেন, ‘যেমনভাবে আপনারা টিবি এবং চিকেন পক্স সারিয়ে তোলার উপায় বের করেছেন, পাকস্থলীর জন্য চিকিৎসারও খুঁজে বের করুন। শেষপর্যন্ত অ্যালোপাথি তো ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে।’ সঙ্গে বলেন, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস থেকে কি মুক্তি দিতে পারে অ্যালোপাথি ওষুধ?
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় রামদেবের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিয়ো নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়। ভিডিয়োটি তুলে ধরে গত শনিবার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) তরফে অভিযোগ করা হয়, অ্যালোপাথিকে ‘বোকা বিজ্ঞান’ বলেছেন রামদেব। পাশাপাশি রেমডেসিভির, ফ্যাবি ফ্লু-সহ ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার অনুমোদিত বিভিন্ন ওষুধ করোনাভাইরাসের চিকিৎসা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন রামদেব। ‘অ্যালোপাথি ওষুধ নিয়ে লাখ লাখ রোগী মারা যাচ্ছেন’ বলেও দাবি করেন। সেই ‘অশিক্ষিত’ মন্তব্যের জন্য রামদেবের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে আর্জি জানায় দেশের চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সংগঠন।
বিতর্কের মধ্যেই রবিবার কড়া ভাষায় রামদেবকে চিঠি লেখেন হর্ষবর্ধন। তিনি জানান, অ্যালোপাথি নিয়ে রামদেবের মন্তব্য ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’। অ্যালোপাথি ওষুধ কোটি-কোটি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। বলেন, ‘করোনাভাইরাস যোদ্ধাদের অসম্মান হয়েছে সেই মন্তব্যে এবং দেশের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। অ্যালোপাথি নিয়ে আপনার মন্তব্য আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে এবং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে দুর্বল করে দিতে পারে।’ তারপর বিবৃতি জারি করে মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন রামদেব।