বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বুধবার বাংলাদেশের বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রহমান মিলনায়তনে সংবাদপত্রে জুলাই অভ্যুত্থান শীর্ষক একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাহিদ। সেখানে তিনি বলেন, ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। এর জন্য তাদের কাছে কিছু ব্যাখা আছে। আমরা ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে। এটা একটা কূটনৈতিক বিষয়। কিন্তু শেখ হাসিনা যদি সেখান থেকে রাজনীতি কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করেন ভারতে থেকে রাজনৈতিক মিটিং করেন, বক্তব্য প্রচার করেন তবে এর দায় ভারতকে নিতে হবে। ভারত সরকারের কাছে আমরা জবাবদিহি চাইব। প্রথম আলোর প্রতিবেদন ও ফেসবুকে নাহিদের পোস্ট করা ভিডিয়ো অনুসারে জানা গিয়েছে।
নাহিদ বলেন, সংবাদপত্রে জুলাই অভ্যুত্থান বইটি ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের একটা প্রামান্য দলিল। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের সংবাদপত্রের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু কিছু পত্রিকা অভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। যা দুঃখজনক।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ছাত্র জনতা ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে রাজপথে থাকব। আমরা আমাদের প্রতিরোধ অব্যাহত রাখব। যে কোনও সময়ের জন্য় প্রস্তুত রয়েছি। ফাটল ভয় আতঙ্ক দিয়ে আমাদের আসলে পেছনে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
তিনি বলেন, জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সময় সংবাদপত্রগুলি ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ভূমিকাই পালন করেছে। গণ অভ্যুত্থানের সময় সংবাদপত্রগুলোকে নির্ধারিত সংবাদ প্রকাশ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু অনেক সংবাদপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতাসীন সরকারকে সমর্থন করার জন্য বয়ান তৈরি করেছিল। তিনি বলেন, যাদেরকে শাসকের ন্য়ারেটিভ প্রকাশ করতে বাধ্য় করা হয়েছিল তাদের জনগণের কাছে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত। অন্যথায় তারা বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। খবর প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে।
অন্যদিকে এর আগে নানা ইস্যুতে মুখ খুলেছিলেন নাহিদ।
এর আগে এক্স হ্যান্ডেলে নিজের বক্তব্য তিনি পেশ করেছিলেন নাহিদ। সেখানে তিনি মূলত বলতে চেয়েছেন বাংলাদেশের বহু মানুষের কেন এত ভারত বিদ্বেষ?
নাহিদ ভিডিয়ো বার্তায় বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের বিরুদ্ধে একটা ক্ষোভ রয়েছে। কারণ বাংলাদেশে যে ফ্য়াসিস্ট সরকার ছিল সেই সরকারকে ভারত নিঃশর্তভাবে সমর্থন জানিয়ে এসেছে। গুম খুন করছে। ভোটচুরি করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। সর্বশেষ এই জুলাই উত্থানে গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। শিশু হত্যা করেছে। কিন্তু তারপরেও ভারতের পক্ষ থেকে এই সব যে হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই। বরং সেই হত্যাকারীর প্রধানকেই তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছে। মানুষের ভেতর ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। তারপরেও আমরা সবাইকে আহ্বান জানাই, কোনও দেশ নিয়ে আমাদের জায়গা থেকে আমরা বিদ্বেষ ছড়াব না। কোনও রাষ্ট্রের পতাকাকে আমরা অবমাননা করব না। ভারতেরও উচিত এই ক্ষোভ দূরীকরণে তাদের নিজেদের জায়গা থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করা, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যে বক্তব্য না ছড়িয়ে বরং বাংলাদেশে যে নতুন করে পুনর্গঠন হচ্ছে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ, সেই জায়গায় এগিয়ে আসা।’ বলছিলেন নাহিদ ইসলাম।