এসি চালানো যাবে। কিন্তু এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামানো যাবে না। এমনই জানিয়ে দিলেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মহম্মদ ফাওজুল কবীর খান। সোমবার ঢাকায় তিনি জানিয়েছেন, এসির তাপমাত্রা যদি ২৫ ডিগ্রির নীচে নামানো হয়, তাহলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। যে নির্দেশিকা বাড়ির পাশাপাশি সরকারি অফিস, বেসরকারি অফিস, সচিবালয়, মসজিদেও কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা।
বিদ্যুতের চাহিদা কমাতে চাইছে বাংলাদেশ সরকার!
আর কী কারণে সেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে, সেটা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এত টাকা পাচার করা হয়েছে যে বিদ্যুতের বকেয়া অর্থ মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাথার ঘাম পায়ে পড়ছে। অর্থাৎ আগামিদিনে যত বেশি বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে, তত টাকা মেটানোর ক্ষেত্রে যে সমস্যা হবে, সেটাই তিনি সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শীতকালে বাংলাদেশে ৯,০০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ লাগে। যা গরমকালে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর সেটার বড় অংশ যায় এসি (এয়ার কন্ডিশনার) এবং সেচের জন্য। যেহেতু সেচের জন্য যে পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, সেটা কাটছাঁট করা যায় না। তাই এসির ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা।
নজরদারির চালানোর জন্য বিশেষ দলও থাকবে
আর কথার কথা যে সেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তা মোটেও নয়। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা স্পষ্ট জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশিকা মেনে কাজ করা হচ্ছে কিনা, সেটার উপরে নজরদারি চালানোর জন্য বিশেষ দল থাকবে। সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। আর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েই সেই কাজটা করা হবে। গ্রাম হোক বা শহর - সর্বত্র সেই নির্দেশিকা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা।
আদানি গোষ্ঠীর পদক্ষেপের পরই এমন সিদ্ধান্ত!
তিনি যেদিন সেই ঘোষণা করেছেন, তার কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশে পুরো বিদ্যুৎ (১,৬০০ মেগাওয়াট) সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে আদানি গোষ্ঠী। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোটি-কোটি টাকা বকেয়া থাকায় কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক করে দিয়েছিল। তবে গ্রীষ্মের সময় চাহিদা বৃদ্ধি পাবে বলে বাংলাদেশের অনুরোধে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে আদানি গোষ্ঠী।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাম গোপন রাখার শর্তে আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে আদানি গোষ্ঠী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে কোনওরকম ছাড় দেওয়া হবে না। যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের থেকে ৯০০ মিলিয়ন ডলার বাকি আছে বলে ডিসেম্বরে জানানো হয়েছিল। আর সেই পরিস্থিতিতে বকেয়ার অঙ্কটা আরও যাতে না বেড়ে যায়, সেজন্যই কি এমন সিদ্ধান্ত নিল মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার?