সরাসরি বলা হয়নি। কিন্তু মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে বাজেট পেশ করেছেন, তাতে যে বার্তাটা ছিল, সেটা একেবারে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, নয়া আয়কর কাঠামোয় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করে অর্থমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে পুরনো আয়কর কাঠামো থেকে নয়া ব্যবস্থায় চলে আসুন। নয়া আয়কর কাঠামোয় হেরফেরের পাশাপাশি স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের অঙ্কটা ৫০,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫,০০০ টাকা করেছেন সীতারামন। সেইসঙ্গে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমের (এনপিএস) মাধ্যমেও বেতনভোগীদের করছাড়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। সেইসব বিচার করে নয়া আয়কর কাঠামোয় ১৭,৫০০ টাকা পর্যন্ত বাঁচাতে পারবেন করদাতারা।
সেই পরিস্থিতিতে সকলেরই কি পুরনো আয়কর কাঠামো ছেড়ে নয়া আয়কর কাঠামোয় চলে আসা উচিত? যে নয়া আয়কর ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে সরল। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, সকলের ক্ষেত্রে সেটা বলা যায় না। যাঁর যেমন আয় হবে, সেটা বিবেচনা করেই সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারও ক্ষেত্রে এখনও পুরনো আয়কর কাঠামো সুবিধাজনক। কারও ক্ষেত্রে আবার নয়া আয়কর কাঠামোয় থাকলে বেশি লাভ হবে। সেই পরিস্থিতিতে পাঁচ লাখ থেকে
বার্ষিক আয় ৭.৭৫ লাখ টাকা হলে কী করবেন?
আপনার যদি বার্ষিক আয় সাত লাখ টাকার মধ্যে হয়, তাহলে নয়া আয়কর কাঠামো বেছে নিতে পারেন। কারণ আয়কর আইনের ৮৭এ ধারার আওতায় ২৫,০০০ টাকার যে রিবেট পাওয়া যায়, তাতে করের অঙ্কটা শূন্য হয়ে যায়। আর যাঁরা বেতনভুক্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে সেই সীমাটা আরও বেশি। স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাবদ ৭৫,০০০ টাকা করছাড় পাওয়ায় বেতনভুক্তদের আয় ৭.৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হলেও কোনও কর দিতে হবে না।
৭.৭৫ লাখের বেশি আয় হলে কী করবেন
যাঁদের বার্ষিক আয় ৭.৭৫ লাখ টাকার বেশি, তাঁদের কিছুটা হিসাব করে দেখতে হবে। যদি পুরনো আয়কর কাঠামোর আওতায় যে পরিমাণ ছাড় পাবেন, সেটা ব্রেক-ইভেন লিমিটের (টেবিলে দেওয়া আছে) থেকে বেশি হয়, তাহলে পুরনো ব্যবস্থায় থাকলে লাভ হবে। আর যদি সেটা না হয়, তাহলে নয়া আয়কর কাঠামোই বেশি লাভজনক হবে আপনার জন্য।
অর্থাৎ সহজ হিসেবে বলতে গেলে যদি আপনার ডিডাকশনের (পুরনো আয়কর কাঠামো) অঙ্কটার থেকে ব্রেক-ইভেন লিমিট বেশি হয়, তাহলে নয়া আয়কর ব্যবস্থায় থাকা উচিত। আর যদি ব্রেক-ইভেন লিমিটের থেকে ডিডাকশনের অঙ্কটা (পুরনো আয়কর কাঠামো) বেশি হয়, তাহলে পুরনো আয়কর কাঠামোয় থাকা উচিত করদাতাদের।
৫ কোটি টাকার বেশি আয়ের ক্ষেত্রে কী করবেন?
বিষয়টি নিয়ে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ গ্রুপের ‘লাইভ মিন্ট’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাই দ্য বুক এলএলপি কনসাল্টিংয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং পার্টনার অনুরাগ জৈন বলেন যে ‘যাঁদের বার্ষিক আয় পাঁচ কোটি টাকার বেশি, তাঁদের এই তুলনা করার কোনও প্রয়োজন নেই। তাঁদের অবশ্যই নয়া আয়কর কাঠামো বেছে নেওয়া উচিত। কারণ পুরনো আয়কর কাঠামোয় ৩৭ শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়। যা নয়া আয়কর কাঠামোয় ২৫ শতাংশ।’