সোমবার থেকে প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে অংশ নিতে এসেছেন বহু ধরনের সাধু-সন্ন্যাসীরা। তাঁদের মধ্যে একজন সন্ন্যাসী সকলের নজর কেড়েছেন। আর তিনি হলেন মাসানি গোরখ বাবা ওরফে আইআইটি বাবা। সোশ্যাল মাধ্যমে তিনি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আসলে তিনি আইআইটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করার পরে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। আইআইটি মুম্বই থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন থাকে বহু তরুণ তরুণীর। তবে সেখানে ভর্তি হওয়াটা মোটেও সোজা বিষয় নয়। তা সত্ত্বেও এত বড় সুযোগ পেয়েও সবকিছু ছেড়ে তিনি সন্ন্যাসী হওয়ায় তা সকলের নজর কেড়েছে।
আরও পড়ুন: মহাকুম্ভ মেলায় SP-র শিবিরে মুলায়ম সিংয়ের মূর্তি, তীব্র সমালোচনায় আখড়া পরিষদ
জানা যাচ্ছে, তিনি আইআইটি থেকে এয়ার স্পেস এবং অ্যারোনটিক্যাল স্ট্রিমে ইঞ্জিনিয়ারিং করেছেন। হরিয়ানার বাসিন্দা আইআইটি বাবার আসল নাম অভয় সিং। অভয় সিংয়ের একজন ইঞ্জিনিয়ার থেকে সন্ন্যাসীতে পরিণত হওয়ার পিছনের গল্পটিও খুব আকর্ষণীয়। তাঁর ইচ্ছা ছিল ফটোগ্রাফি করার। ফটোগ্রাফিতে চাকরির জন্য ডিগ্রির প্রয়োজন ছিল। এমন পরিস্থিতিতে এক বছর কোচিংও পড়িয়েছেন তিনি। বাবার কথায়, তাঁর গল্পটা অনেকটা হিন্দি সিনেমা থ্রি ইডিয়টসের মতো।
নিউজ ১৮ কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাবা তাঁর জীবনের অনেক গোপন জানান। বাবাকে যখন প্রশ্ন করা হয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফটোগ্রাফি করে এই অবস্থায় পৌঁছেছেন কীভাবে? এই বিষয়ে বাবা খুব স্পষ্ট করে বললেন, ‘এটাই শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র। জ্ঞানের পিছনে চলতে থাকো, চলতে থাকো, কতদূর যাবে? শেষ পর্যন্ত এখানেই আসতে হবে। কিন্তু, তখন কী করব বুঝতে পারছিলাম না?
আইআইটি বাবা বলেছেন, যে আইআইটি মুম্বইয়ে ৪ বছর পড়ার পরে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের কোচিংও করেছিলেন। আবেগের কারণে তিনি ফটোগ্রাফি শিখেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ডিজাইনিং-এ মাস্টার্স ডিগ্রি করেছি। এত কিছু করার পরও কোথাও মন বসছিল না। আমার ভিতরে দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে।’
বাবা বলেন, তিনি জীবনে প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, ইঞ্জিনিয়ারিং করেও জীবনের মানে বুঝতে পারছিলেন না। তাঁর কথায়, ‘আর কী করব। এর পর আমার মনে হল ফটোগ্রাফি করা উচিত। ট্রাভেল ফটোগ্রাফি শুরু করলাম। মনে হচ্ছিল আমি এই স্বপ্নে জীবন যাপন করব। ঘোরাঘুরি করব, সব জায়গায় যাব এবং অনেক মজা করব এবং অর্থ উপার্জনও করব। এটি একটি বিস্ময়কর পৃথিবী হবে।’ তবে বাবা জানান, এরপরও তিনি ভিতরে শূন্যতা অনুভব করেন। বাবা জানান, তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে অর্থ উপার্জন করতেই পারতেন। কিন্তু, এখানেও জীবনের মানে বুঝতে পারেননি। যদিও মাসানি বাবা আজকাল প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে আছেন এবং মহাকুম্ভ ২০২৫ উপভোগ করছেন। এর আগে তিনি অনেক ধর্মীয় ক্ষেত্রে যোগ দিয়েছেন। গত চার মাস তিনি কাশীতে ছিলেন। এছাড়া তিনি ঋষিকেশে থেকেছেন। তিনি বলেন, তিনি চারটি ধামেই থাকেন। তাঁর অবস্থান পরিবর্তন হতে থাকে।