কোভিড অতিমারীর মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান মন্ত্রীর আয়ুষ ভিত্তিক চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশাবলী ঘোষণার কড়া সমালোচনা করল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে আইএমএ বেশ কিছু চোখা প্রশ্ন তুলেছে। সেই সঙ্গে কোভিড নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের আয়ুষ ভিত্তিক নির্দেশাবলী পালন করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে রাজি কি না, তোলা হয়েছে সে প্রশ্নও।
গত মঙ্গলবার মৃদু ও মাঝারি পর্যায়ের Covid-19 চিকিৎসায় জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নীতি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ (আয়ুর্বেদ, যোগ ও ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্দা এবং হোমিওপ্যাথি) অর্থাৎ বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থার ভিত্তিতে। তাই ননিয়ে আপত্তি তুলেছেন অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকরা।
দেশের বৃহত্তম বেসরকারি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক সংগঠনের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কেন্দ্রের বিকল্প চিকিৎসা মাধ্যমের সাফল্যের দাবির সপক্ষে কোভিড রোগীর সেরে ওঠার কোনও প্রমাণ আদৌ আছে কি? যদি তা থাকে, সে ক্ষেত্রে সেই প্রমাণের মাত্রা দুর্বল, মাঝারি, না কি মজবুত? এমন প্রমাণ সরকারের হাতে থাকলে তা প্রকাশ করা হোক এবং তার বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ করা হোক।
আইএমএ প্রশ্ন তুলেছে, ‘মন্ত্রীর কত জন সহকর্মী এখনও পর্যন্ত এই নীতিতে বর্ণিত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন? তা হলে কোভিড চিকিৎসার গোটা দায়িত্ব আয়ুষ মন্ত্রকের হাতে ছাড়তে বাধা কোথায়?’
বলা হয়েছে, ‘তিনি (হর্ষ বর্ধন) স্বীকার করেছেন যে সরকারি কোভিড নীতি অভিজ্ঞতামূলক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে অর্থাৎ সব প্রমাণই ঘটনার ভিত্তিতে সংগৃহীত হয়েছে এবং তা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা লব্ধ। তিনি নিজেই আয়ুষকে ঐতিহাসিক বলেছেন আয়ুর্বেদকে আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত হিসেবে উল্লেখ করে। আইএমএ-র দাবি, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর ঘোষিত নীতি সম্পর্কে স্বচ্ছ থাকুন। যদি তা না করতে পারেন তা হলে বুঝতে হবে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তিনি প্রতারণা করছেন এবং টোটকাকে ওষুধ বলে চালিয়ে রোগীদের বিপদ ডেকে আনার ব্যবস্থা করছেন।’
শুধু তাই নয়, এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে খোলাচিঠি পাঠিয়ে জবাব চেয়েছে আইএমএ। তাতে সাফ বলা হয়েছে, ‘তিনি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আয়ুষমন্ত্রী নন। ওঁর পেশ করা নথিপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা কী? সরকারি নীতি প্রণয়নের জেরে সমস্যা দেখা দিলে তার দায়ভার কে নেবে? মনে রাখা দরকার, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।’
চাাপে পড়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ঘোষিত কোভিড চিকিৎসা নীতি শুধুমাত্র দেশের আয়ুষ হাসপাতালগুলির জন্যই প্রযোজ্য। তবে সে যুক্তি আইএমএ-র সওয়ালের মুখে আদৌ ধোপে টিকবে কি না, তা নিয়ে ঘো সন্দেহ দেখা দিয়েছে।