ভারতের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানকে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ মঞ্জুর করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)। আর এমন আবহে সেই টাকা দেওয়া হচ্ছে ইসলামাবাদকে, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। তৈরি হয়েছে যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।
এক্স বার্তায় ওমর আবদুল্লা লিখেছেন, ‘আমি নিশ্চিত নই, আন্তর্জাতিক মহল কীভাবে মনে করে উপমহাদেশে বর্তমান উত্তেজনা কমে যাবে, যখন কিনা পুঞ্চ, রাজৌরি, উরি, তাংধর এবং আরও অনেক জায়গায় হামলা করার জন্য পাকিস্তান যে সমস্ত অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেটা কার্যত মিটিয়ে দিচ্ছে আইএমএফ।’
পাকিস্তানের ট্র্যাক রেকর্ড এবং সন্ত্রাসবাদের মদতের জন্য সেই অর্থ ব্যবহারের আশঙ্কায় ইসলামাবাদকে ঋণ দেওয়ার বিরোধিতা করে ভারত। নয়াদিল্লির তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরেই আইএমএফের থেকে ঋণ নিয়ে আসছে পাকিস্তান। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শর্ত মেনে সেই টাকা খরচের ক্ষেত্রে ইসলামাবাদের ট্র্যাক রেকর্ড অত্যন্ত খারাপ।
ভারতের তরফে জানানো হয়, বছরের পরে বছর আইএমএফের থেকে ঋণের অর্থ পেয়েছে পাকিস্তান। শেষ পাঁচ বছরেও পাকিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের চারটি কর্মসূচি ছিল। সেটা যদি ঠিকমতো কাজে লাগাত, তাহলে ফের আইএমএফের কাছে হাত পাততে হত না। অর্থাৎ ঋণের জন্য হাত পেতেও পাকিস্তান আখেরে কাজের কাজ কিছু করে না বলে ভারতের তরফে জানানো হয়েছে।
সেইসঙ্গে ভারতের তরফে জানানো হয়, যে দেশ লাগাতার আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে মদত জুগিয়ে আসে, সেই দেশকে ঋণ প্রদান করা হলে বিশ্বের কাছে ভয়ংকর বার্তা যায়। পাকিস্তানকে যে ঋণ দেওয়া হবে, সেটাও সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার জন্যও ব্যবহার করার আশঙ্কা রয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে ঋণ না দেওয়ার আর্জি জানায় ভারত। আইএমএফের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ভোটদান থেকেও বিরত থাকে।
শেষপর্যন্ত অবশ্য ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানকে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত ঋণ মঞ্জুর করেছে আইএমএফ। আর এমন একটা সময় সেই টাকা দেওয়া হচ্ছে ইসলামাবাদকে, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। তৈরি হয়েছে যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি। পহেলগাঁও হামলার পরে ভারত 'অপারেশন সিঁদুর' চালিয়ে জঙ্গি শিবির ধ্বংস করতেই সন্ত্রাসবাদীদের জন্য মোট কেঁদে উঠেছে পাকিস্তানের। তারপর থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ভারতে তিনবার ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসলামাবাদ। নয়াদিল্লি যেখানে শুধুমাত্র জঙ্গি শিবিরকে ধ্বংস করেছে, সেখানে ভারতের সামরিক ঘাঁটি ও সাধারণ মানুষকে নিশানা করেছে পাকিস্তান। সীমান্তে লাগাতার গোলাবর্ষণ করেছে। তার জেরে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।