বিশ্ব কল্যাণ পুরকায়স্থ
রবিবার অসমের মুখ্য়মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন,মণিপুরে যে হিংসা চলছে তার জেরে অসমের শান্তিতে প্রভাব ফেলছে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর প্রভাব পড়ছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবেশী রাজ্যে হিংসার জেরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মণিপুর সীমান্ত থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরে অসমের লাখিপুর মহকুমা। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সাংবাদিক বৈঠকে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মণিপুরের পরিস্থতি খুব উদ্বেগজনক। এটার একটা প্রভাব নিশ্চিতভাবে আমাদের উপর পড়ে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছি।
অসমের সঙ্গে মণিপুরের অন্তত ২০০ কিমি সীমান্ত এলাকা রয়েছে। এই সীমান্তের একটা বড় অংশে নদী রয়েছে। স্থানীয় পরিবহণের জন্য় কিছু জায়গায় নৌকার ব্যবস্থা রয়েছে।
জিরবামে গত ১১ নভেম্বরের পরিস্থিতির পরে ( যেখানে ১২জনের মৃত্যু হয়েছিল) অসম পুলিশ নৌকা পরিবহণ ব্যবস্থা স্থগিত করে দেয়। পুলিশ সুপার নুমাল মাহাট্টা গত ১৯ নভেম্বর জানিয়েছিলেন, কিছু প্রবেশপথ, হাইওয়ে ছাড়া সেটা সাময়িকভাবে সিল করা হয়েছে।
তিনি বলেছিলেন, আমরা অন্তত ২০০ পুলিশকর্মী নিয়োগ করেছি। সীমান্ত এলাকায় তাদের নিয়োজিত করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির জেরে কিছু বিপজ্জনক এন্ট্রি পয়েন্টকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবেশী দেশের হিংসা যাতে এখানে না ছড়ায় সেটা দেখা হচ্ছে। কাছাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। এই ধরনের কোনও হিংসা থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে সকলকে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত গত বছরের মে মাস থেকে মণিপুরের হাজার হাজার বাসিন্দা অসমে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অনেকেই সেখানে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন। সরকারি তথ্য় অনুসারে প্রায় ৫০০০ জিরবামের বাসিন্দা কাছাড়ে বাস করা শুরু করেছিলেন। তাদের মধ্য়ে বেশিরভাগই ফিরে যান।
৭ নভেম্বর ফের জিরবামে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর অন্তত ২২টি দেহ কাছারের শিলচর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছিল। গত ১৬ই নভেম্বর কিছু প্রতিবাদকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছিল। পরে কাছারের বাসিন্দাদের একাংশের মতে, সেদিন জিরবামের বাসিন্দাদের দেহ অসমে নিয়ে আসা হয়েছিল। এটা ঠিক হয়নি। তাঁরা বলেন কুকি হমার ও মৈতিয়ীরা অসমে শান্তিপূর্ণভাবে থাকেন। এই ধরনের সিদ্ধান্তের মাধ্য়মে সেই সহাবস্থানকে নষ্ট করাটা সরকারের ঠিক হবে না।
তবে এবারের অসমের মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতিবেশী রাজ্যে হিংসার জেরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।