করোনা আবহে রেমডেসিভির ইনজেকশনের হাহাকার বেড়েছে দেশ জুড়ে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে কেন্দ্রকে। এহেন অবস্থায় রেমডেসিভির আমদানি শুল্ক মুকুব করা হল। শুধু তাই নয়, রেমডেসিভির তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচা মালের উপরও কোনও আমদানি শুল্ক না চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। শুল্কের উপর এই ছাড় চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত লাগু থাকবে।
এই বিষয়ে শুল্ক দপ্তর বলে, 'সাধারণের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় বুঝেই কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে রেমডেসিভির বা সেই সংক্রান্ত যেকোনও পণ্য যখন দেশে আমদানি করা হবে তখন সেগুলির উপর কোনও শুল্ক লাগু করা হবে না।' এর ফলে দেশের বাজারে রেমডেসিভিরের দাম আরও কমতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পর কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গয়াল টুইট করে লেখেন, 'করোনা রোগীগের সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিত্সা পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অগ্রাধিকারের কথা মাথায় রেখে রেমডেসিভির এপিআই, ইনজেকশনের আমদানির উপর শুল্ক মুকুব করা হয়েছে। এর ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং রেমডেসিভিরের দাম অনেকটাই কমবে। রোগীরা এতে স্বস্তি পাবেন।'
এর আগে ১৭ এপ্রিল রেমডেসিভির ইনজেকশনের দাম কমায় দেশের সাতটি প্রধান ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। কেন্দ্রীয় সরকার রেমডেসিভির ইনজেকশনের উৎপাদন আর সরবরাহ বৃদ্ধি, সঙ্গে মূল্য হ্রাস নিয়ে এই ইনজেকশন উৎপাদনকারী আর অংশীদারি সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করে। তারপরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আর এর এক সপ্তাহ যেতে না যেতে রেমডেসিভিরের আমদানি শুল্ক মুকুব করল কেন্দ্র।
বর্তমানে দেশের বাজারে ক্যাডিলা হেল্থকেয়ার লিমিটেডের আরইএমডিএসি-র ১০০ মিলিগ্রাম/ভায়াল-এর দাম ৮৯৯। সিনজেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড-এর রেমউইন-এর দাম ২৪৫০। ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরিস লিমিটেডের আরইডিওয়াইএক্স এখন পাওয়া যাচ্ছে ২৭০০। সিপলার সিআইপিআরইএমআই দাম করেছে ৩০০০ টাকা। মায়লান ফার্মাসিউটিক্যালস প্রাইভেট লিমিটেডের ডিইএসআরইএম মিলছে ৩৪০০ টাকায়। জুবিল্যান্ট জেনেরিক্স লিমিটেডের জেইউবিআই-আর-এর দামও ৩৪০০ টাকা।
তবে খাতায় কলমে এই দামের কথা জানা গেলেও, বাস্তব পরিস্থিতিতে রেমডেসিভিরের কালো বাজারির কথা জানা যাচ্ছে। এই আবহে বাংলাদেশ থেকে ৫০ হাজার ডোজ রেমডেসিভির আমদানির জন্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন। এই আবহে রেমডেসিভিরের আমদানি শুল্ক নিয়ে কেন্দ্রের ঘোষণা কিছুটা হলে স্বস্তি দেবে করোনা রোগীদের।