ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরির ভুয়ো আশ্বাস দিয়ে ৪ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হল বিহারের জেহানাবাদ জেলার পালি অঞ্চলের ২৩ বছরের রৌশন কুমার সিং।
শুক্রবার দানাপুরের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (MI) সূত্রে খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে বিহার পুলিশ। অভিযোগ, সেনাবাহিনীর জাল পরিচয়পত্র, উর্দি, সিলমোহর-সহ একাধিক ভুয়ো সরঞ্জাম ব্যবহার করে প্রতারণার ব্যবসা ফেঁদেছিল ওই যুবক।
২০২০ সালের জুলাই মাসে MI আধিকারিকরা জানতে পারেন, একদা সেনাবাহিনীর সাব-এরিয়া প্রধান দফতরের মেসে কাজ পাওয়া রৌশন আর্মি সাপ্লাই কোর বিভাগের সিপাইয়ের উর্দি পরে সামরিক হাসপাতালে হাজির হয়েছিল। অভিযোগ, সামরিক হাসপাতালের এক কর্মীর ছেলেকে সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর থেকে চার লাখ টাকা আত্মস্যাৎ করে ধৃত যুবক।
তদন্তে জানা যায়, সম্ভাব্য শিকারদের বিশ্বাস অর্জন করতে ঝাড়খণ্ডের রামগড় ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় স্টেট ব্যাঙ্ক শাখায় একটি ডিফেন্স স্যালারি প্যাকেজ অ্যাকাউন্টও খুলেছিল ওই প্রতারক।
রৌশনের গ্রামে গোয়েন্দারা হানা দিলে তার বাবা-মা জানান, তাঁদের ছেলে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ায় আগ্রহীদের প্রশিক্ষণও দিত ওই যুবক। তার হেফাজত থেকে পাঁচটি সেনাবাহিনীর ভুয়ো পরিচয়পত্র, ২টি আধার কার্ড, ২টি প্যান কার্ড, বেশ কিছু নকল নথিপত্র, সেনা উর্দি পরা একাধিক ফোটো এবং দুটি জাল রাবার স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতকে আরও জেরা করার উদ্দেশে দানাপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
দানাপুর থানার প্রধান আধিকারিক অজিত কুমার সাহা হিন্দুস্তান টাইমস-কে জানিয়েছেন, একদা সেনাবাহিনীতে চাকরি করায় আগ্রহী রৌশন পরবর্তীকালে প্রতারণায় হাত পাকায়। পরে দিল্লিতেও সে একটি ডিএসপি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে সক্ষম হয়। তার মোবাইলে সেনায় যোগদানে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণের ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের উর্দি পরা অবস্থায় তার বেশ কিছু ছবিও মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত রয়েছে।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪০ (সেনা সদস্যের ভেক ধরা), ৪১৯ (পরিচয় গোপন করে প্রতারণা), ৪২০ (প্রতারণা ও অসৎ কাজ), ৪৬৭(মূল্যবান সম্পদ বা অর্থ লাভের উদ্দেশে নথি জাল করা), ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশে নথিজাল করা) এবং ৪৭১ (প্রতারণার উদ্দেশে ভুয়ো নথিপত্র ব্যবহার) নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।