পাকিস্তানে ধর্ষণের ঘটনার লাগাতার বৃদ্ধির পেছনে মহিলাদেরই দায়ী করলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর মতে, অশ্লীলতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজে। এটি (ধর্ষণ) তারই ফলাফল। মঙ্গলবার ইমরানের এই ‘ভিক্টিম ব্লেমিংয়ের’ পর পাকিস্তান-সহ বিশ্বজুড়ে উঠেছে নিন্দার ঝড়।
লাইভ টেলিভিশনে ইন্টারভিউতে নারী সুরক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মহিলাদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেন ইমরান। তিনি বলেন, 'সমাজে ধর্ষণের ঘটনা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।' এর জন্য মহিলারাই দায়ি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘মহিলাদের নিজেদের শরীর ঢেকে রাখা উচিত।’ 'পর্দা প্রথার ধারণার মূলে এই ধরনের ইচ্ছা বিনষ্ট করা। আসলে সব পুরুষের নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো ক্ষমতা থাকে না,' ঠিক এইভাবেই ব্যাখ্যা করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ধর্ষণের ঘটনায় সামাজিক পরিস্থিতি, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ইত্যাদি বিষয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি ইমরান। বরং হলিউড ও বলিউডকেই এর জন্য দায়ী করেন তিনি।
এরপরেই খোদ পাকিস্তানেই ওঠে নিন্দার ঝড়। একজন প্রধানমন্ত্রী কীভাবে এ ধরনের কথা বলতে পারেন, তাই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। 'পাকিস্তান আছে পাকিস্তানেই,' বলতে শোনা যায় অনেককে। ধর্মীয় নীতি মেনেই ইমরান পর্দার কথা বলেছেন, একথা মনে করিয়ে দেন অনেকে। তার পালটা জবাব দেন ইমরানের প্রাক্তন স্ত্রী তথা ব্রিটিশ পরিচালক জেমিমা গোল্ডস্মিথ। তিনি কোরানেরই উক্তি দিয়ে মনে করিয়ে দেন যে পুরুষদেরই নিজেদের চোখ ও গোপনাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
সেই সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন স্বামী যে এতটা বদলে গিয়েছেন, সে কথাও যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না জেমিমা। ১৯৯৫ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইমরানের সঙ্গে বিবাহিত ছিলেন জেমিমা। তিনি এ প্রসঙ্গে লেখেন, 'আশা করি ইমরানের কথার কোনও অপব্যাখ্যা হয়েছে। কারণ যে ইমরানকে আমি চিনতাম, সে বলত যে পর্দাটা পুরুষের চোখে থাকা উচিত্, নারীর গাত্রে নয়।'
ইমরানের এই মন্তব্যে নিজেদের বিস্ময় প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনও। ঘটনার নিন্দা করেছে পাকিস্তানের একাধিক নারীবাদী ও নারী সুরক্ষা সংগঠনও।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।