একান্ন বছর আগে নয়া দেশ বাংলাদেশ গঠিত হয়েছিল। সেই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যের’ বলে উল্লেখ করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর দাবি, আটের দশকে বাংলাদেশে যখন খেলতে গিয়েছিলেন, তখন স্টেডিয়ামের ভিতরে এবং বাইরে প্রত্যেক বাংলাদেশিকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে শুনেছিলেন।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান দাবি করেন, বাংলাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন, সেইসময় স্টেডিয়ামের ভিতরে এবং বাইরে প্রত্যেক বাংলাদেশি ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। সেদিনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ পৃথক হয়ে যাওয়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।
ইমরানের কথায়, ‘(বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের) ১৮ বছর পর পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে দুটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম। দুই ম্যাচের সিরিজ আমরা জিতে গিয়েছিলাম। আমার প্রিয় পাকিস্তানিরা, আমরা অধিকার কেড়ে নেওয়ায় ও ন্যায়বিচার না করায় যে দেশে ১৯৭১ সালে আমাদের বিরুদ্ধে এত ঘৃণা ছিল, সেখানের স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৫০,০০০ মানুষ একটাই স্লোগান দিচ্ছিলেন - পাকিস্তান জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ।'
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, '(সেই প্রদর্শনী ম্যাচ যেখানে খেলা হয়েছিল, সেই) স্টেডিয়াম থেকে হোটেল পর্যন্ত রাস্তার দু'ধারে প্রচুর মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন। পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান উঠছিল। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমরা ওদের উপর কতটা অবিচার করেছি। ওঁরা আমাদের ছেড়ে দিতে চাইতেন না। কিন্তু আমরা সুবিচার করিনি।'
তারইমধ্যে বৃহস্পতিবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শুক্রবার প্রথমবার জনসমক্ষে আসেন ইমরান (Former Pakistan PM Imran Khan)। লাহোরের হাসপাতালে উইলচেয়ারে বসেই প্রায় এক ঘণ্টা ভাষণ দেন ইমরান। তাঁর বাঁ পায়ে মোটা করে ব্যান্ডেজ দেখা গিয়েছে। সেই পা তুলে রেখে ভাষণের সময় পাকিস্তানি সরকারকে তুমুল আক্রমণ শানান ইমরান। তাঁর নিশানায় ছিলেন মূলত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তথা তাঁর উত্তরসূরি শেহবাজ শরিফ।
আরও পড়ুন: Imran Khan Injury update: ইমরান খানের পায়ে বুলেট কি সরাসরি লেগেছিল? পাক রাজনীতি ঘিরে উঠছে বহু প্রশ্ন
পাকিস্তানের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক অভিযোগ করেন, তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে গুলি করার যে চক্রান্ত করা হয়েছিল, সেই ষড়যন্ত্রের 'মাস্টারমাইন্ড' ছিলেন মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং সেনার এক উচ্চপদস্থ কমান্ডার। ইমরানের কথায়, 'ওঁরা আমায় মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।' যদিও পাকিস্তান সরকারের দাবি, ইমরানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তাদের কোনও হাত নেই।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেন, ধর্মীয় ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে তাঁকে খুনের ছক তৈরি করা হয়েছিল। তিনি ধর্মীয় বিরুদ্ধাচরণ এবং হজরত মহম্মদের অবমাননা করেছেন বলে ছড়িয়ে দেওয়া হত। তারপর তাঁকে খুন করিয়ে বলা হত যে কোনও ধর্মীয় উগ্রপন্থী সেই ঘটনায় জড়িত আছে। তবে সেই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ পেশ করেননি পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক তথা পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। যিনি চলতি বছর সংসদে আস্থাভোটে হেরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি খুইয়েছিলেন।