ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বড়সড় ধাক্কা খেলেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। গত বছর ডিসেম্বরে নেপালের সংসদের নিম্নকক্ষ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ হিসেবে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে সংসদের নিম্নকক্ষ পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ঐতিহাসিক রায়ে প্রধান বিচারপতি চোলেন্দ্র শুমশেরের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী ১৩ দিনের মধ্যে সংসদের অধিবেশন ডাকতে হবে। যা ওলিকে ইমপিচ করা বা প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। সেই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরে ওলির বিরোধী অংশের নেতা এবং ছাত্রনেতারা। শাসক দলে ওলির বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা মাধবকুমার নেপালে বলেন, 'সাংবিধানিক আদর্শ এবং মানুষের আকাঙ্ক্ষার পক্ষে ঐতিহাসিক রায় দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।' প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল তথা ‘প্রচণ্ড’ এবং মাধবের মিষ্টি খাওয়ানোর ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
শাসক দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরে প্রবল চাপের মুখে গত ২০ ডিসেম্বর সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে সেই প্রস্তাব পাশ হয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাতে দ্রুত অনুমোদন দিয়ে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী। একইসঙ্গে মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রস্তাব মতো জাতীয় নির্বাচনের দিনও ঘোষণা করে দিয়েছিলেন।
সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায সরব হয়েছিলেন ‘প্রচণ্ড’। সংসদের নিম্নকক্ষ পুনরায় চালু করার আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে কমপক্ষে ১৩ টি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। শাসক দলের মুখ্য উইপ দেবপ্রসাদ গুরুংও একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তার ভিত্তিতে ১৭ জানুয়ারি থেকে শুনানি শুরু হয়। নিজের স্বপক্ষে ওলি দাবি করেছিলেন, তাঁর দলের একাংশই ‘সমান্তরাল সরকার’ চালানোর চেষ্টা করছিলেন। একইসঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সরকারের নেতা হিসেবে তাঁর হাতে সংসদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা আছে। যদিও সেই সওয়ালে কাজ হয়নি।