ইসলাম এবং খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়া দলিতদের তফসিলি মর্যাদা দেওয়ার বিরোধিতা করল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফানামা পেশ করে এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্র বলে, ‘খ্রিস্টধর্ম ও ইসলামে অস্পৃশ্যতা নেই’। কেন্দ্র বলে, ‘তফসিলি জাতির লোকেরা ইসলাম বা খ্রিস্টধর্মের মতো ধর্মে রূপান্তরিত হন, যাতে তারা অস্পৃশ্যতার নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। খ্রিস্টধর্ম বা ইসলামে অস্পৃশ্যতা একেবারেই প্রচলিত নয়।’
উল্লেখ্য, বেসরকারী সংস্থা ‘সেন্টার ফর পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশনে’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে এই হলফনামা পেশ করেছে কেন্দ্র। সংগঠনটি দাবি করে, ১৯৫০ সালের সংবিধান (তফসিলি জাতি) আদেশে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখদের তফসিলি জাতি হিসাবে বিবেচনা করা হবে। আবেদনকারীর অভিযোগ, এই আদেশ অসাংবিধানিক, কারণ এটি ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হচ্ছে। যদিও কেন্দ্রের হলফনামায় বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়া দলিতদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ১৯৫৬ সালে সামাজিক ও রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে ডঃ বিআর আম্বেদকরের নেতৃত্ব তফসিলি জাতির একাংশ স্বেচ্ছায় বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। তবে মুসলামনদের ক্ষেত্রে ধর্মান্তরণ প্রক্রিয়াটি কয়েক শতাব্দী ধরে
কেন্দ্র বলে, ‘ভারতীয় নাগরিক ও বিদেশি নাগরিক হিসেবে এই মামলায় শ্রেণিবিভাগ করা হচ্ছে না। কিন্তু ভারতের সংবিধানের ১৪ নং ধারা অনুযায়ী, শ্রেণিবিভাগ নিষিদ্ধ নয়।’ এদিকে কেন্দ্র পরোক্ষভাবে এও ইঙ্গিত করে যে, ‘খ্রিস্টান ও ইসলাম ভারতের ধর্ম নয়।’ কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, তফসিলি জাতির তালিকাভুক্ত করার অর্থ হল পিছিয়ে সম্প্রদায়কে সাহায্য করা। এই আবহে কেন্দ্রের বক্তব্য, ‘খ্রিস্টধর্ম বা ইমলামে কেউ অস্পৃশ্যতার কারণে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, এমন প্রমাণ দেওয়া কোনও গবেষণা নেই।’ তবে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, ‘শত শত বছর ধরে হিন্দু সমাজে যে নিপীড়নমূলক পরিবেশ রয়েছে, তা খ্রিস্টান বা ইসলামী সমাজেও তফসিলি জাতির লোকেদের মধ্যে ছিল বলে প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট প্রামাণিক তথ্য রয়েছে।’