সরকারি চাকরির পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সক্ষমদের কোটা অস্বীকার করা যাবে না। শুধু তাই নয়, যদি কোনও ব্যক্তি প্রতিবন্ধী কোটায় চাকরি নাও পেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রেও অস্বীকার করতে পারবে না সরকারি চাকরির নিয়োগকারী সংস্থা। এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল ও বিচারপতি আর সুভাষ রেড্ডির ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্য দাবি করে যে, ভাইয়ের মৃত্যুর পর অনুকম্পাজনিত চাকরির সুবিধা পেয়েছেন ওই প্রতিবন্ধী মহিলা। সেক্ষেত্রে যেহেতু তিনি অনুকম্পাজনিত চাকরির সুবিধা উপভোগ করছেন, সেকারণে প্রতিবন্ধী কোটায় পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কৌল ও বিচারপতি আর সুভাষ রেড্ডির ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘যদি কোনও ব্যক্তি প্রতিবন্ধী হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়ে থাকেন অথবা চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন, সেক্ষেত্রে ১৯৯৫ সালের প্রতিবন্ধী আইন অনুয়ায়ী এই দু’ধরনের ব্যক্তির মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।’
এদিন নির্দেশ দিতে গিয়ে সর্বোচ্চ আদালত নিজের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে যে, প্রতিবন্ধীদের সরকারি চাকরির পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ করতে অস্বীকার করা যাবে না। শুধু তাই নয়, যদি কোনও ব্যক্তি প্রতিবন্ধী কোটায় চাকরি নাও পেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রেও অস্বীকার করতে পারবে না সরকারি চাকরির নিয়োগকারী সংস্থা।
মামলার বয়ান অনুয়ায়ী, অনুকম্পাজনিত চাকরির সুবিধাভোগীর নাম লিসাম্মা জোসেফ। ১৯৯৬ সালে রাজ্য সরকারি চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয়। ভাইয়ের মৃত্যুর পর অনুকম্পাজনিত নিয়োগের মাধ্যমে টাইপিস্ট হিসাবে সরকারি চাকরি পান মৃতের দিদি লিসাম্মা। তবে চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় লিসাম্মা শরীরের নীম্নাঙ্গে পক্ষাঘাতগ্রস্তের সমস্যায় ভুগছিলেন অর্থাৎ চিকিৎসার ভাষায় এই রোগকে বলা হয়, ‘পোস্ট-পোলিও রেসিডুয়াল প্যারালাইসিস ইন লোয়ার লিম্ব’। সেক্ষেত্রে তাঁর স্থায়ী অক্ষমতা ৫৫ শতাংশ হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এই চাকরিটা যেহেতু অনুকম্পাজনিত নিয়োগের ঘটনা, সেক্ষেত্রে তাঁকে প্রতিবন্ধী আইন ১৯৯৫ এর অধীনে চাকরি না দিয়ে, সাধারণ বিভাগে নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০২০ সালের মার্চে কেরলের পুলিশ প্রশাসনের লিসাম্মাকে দেওয়া পদোন্নতির সুবিধার সংরক্ষণকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেরল আদালতে মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, গত বছরে ওই প্রতিবন্ধী মহিলার সুবিধার্থে কেরল হাইকোর্ট এই নির্দেশই বহাল রেখেছিল। তারপর রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। এদিন সেই মামলারই শুনানিতে কেরল হাইকোর্টের নির্দেশই কার্যত বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্টও।