আয় করেছেন ১০,০০০ টাকারও কম। অথচ ট্যাক্স দিতে হবে ৪৩ লক্ষ টাকা। মাথায় হাত যুবকের। ইনকাম ট্যাক্সের এমন নিয়ম অনেকেই জানেন না। সম্প্রতি আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে রায়ও দিয়েছে।
আসলে, ৪৩ লক্ষ টাকার করদাতা যুবক মূলত আমেরিকায় উপার্জন করে ভারতে এসেছেন। আর কর আইনের অধীনে, অনাবাসীদের বিদেশী আয়ের উপর ভারতে কর দিতে হয় না ঠিকই, তবে এই ক্ষেত্রে ওই যুবক দেশের পাশাপাশি বিদেশেও বাসিন্দা। তাই নিয়ম অনুযায়ী, ভারতে থাকলেও আমেরিকান আয়ের উপর কর দিতে হবে তাঁকে।
ভারতে ওই যুবক আয়কর বিভাগকে মাত্র ৯,৬০০ টাকার আয় দেখালেও, তাঁকে কর দিতে হয়েছে প্রায় ৪৩ লাখ টাকা। আর নিয়ম লাঘু করেই যুবকদের করের এই বড় চাপে ফেলে আয়কর দফতর। করদাতা আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালে বিভাগ কর্তৃক আরোপিত এই করকে চ্যালেঞ্জ করেও লাভ হয়নি।
আরও পড়ুন: (Bharat Ratna Demand for Ratan Tata: ভারত রত্ন দেওয়া হোক রতন টাটাকে, শিল্পপতির প্রয়াণে প্রস্তাবনা পাশ সরকারের)
টাইব্রেকার নিয়ম কী
আয়কর আইনের অধীনে, টাইব্রেকারের নিয়ম বলে, যদি কোনও ভারতীয় নাগরিক আমেরিকায় আয় করে ভারতে আসেন, তবে ভারতে সেই আয়ের উপর কোনও কর নেওয়া হবে না। কিন্তু তিনি যদি ভারতে এসে ১৮০ দিনের বেশি থাকেন, তবে ভারতে তাঁকে আমেরিকায় অর্জিত আয়ের উপর কর দিতে হবে। ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে একটি চুক্তির ফলে, যে নাগরিকরা ভারত এবং আমেরিকা দুই দেশেই করদাতা বাসিন্দা হিসাবে নিবন্ধিত হন, তাঁদের এই নিয়ম মানতেই হবে।
এবার ওই যুবক আমেরিকায় আয় করে ২০১৩-১৩ আর্থিক বছরে ভারতে ১৮৩ দিনের বেশি সময় কাটান। এরপরেই, টাইব্রেকার পরীক্ষার নিয়ম তার জন্য প্রযোজ্য হয়। যদিও করদাতার দাবি, এই ট্যাক্স সংগ্রহের নিয়মকে ভুল বলেছেন। এর পর আবার আয়কর বিভাগের পাল্টা দাবি, তিনি কেবল ১৮৩ দিন ভারতে থাকেননি, যুবকের স্ত্রী ও দুই সন্তান মুম্বইতে থাকেন এবং তাঁর এক কন্যাও রয়েছে, যে আমেরিকায় পড়াশোনা করছে। এমনকি তাঁর ব্যবসাও ছিল ভারতে।
আরও পড়ুন: (ফল ও সবজির দামের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ পান কৃষকেরা! বাকি লাভ কোথায় যায়? RBI রিপোর্টে চাঞ্চল্য)
আয়কর বিভাগ তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ভারতে তাঁর দৃঢ় সংযোগ, যেমন তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানদের সঙ্গে বসবাস, ২০০৯ সালে স্ত্রীর সাথে শুরু করা একটি ফিল্ম কোম্পানি চালানো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর বিনিয়োগের থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সবটা দেখেই আয়কর বিভাগ রায় দেয় যে ওই ব্যক্তি ভারতের বাসিন্দা, অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাঁর আয় ভারতেও করযোগ্য। তাই আমেরিকায় অর্জিত আয়ের উপর, তাঁকে ভারতেও ট্যাক্স দিতে হয়েছে।