গ্রীষ্মের দাবদাহ নোভেল করোনাভাইরাসের হাত থেকে নিষ্কৃতি দেবে, এমন ধারণা ভুল। মঙ্গলবার এই সতর্কবার্তা দিলেন বিশেষজ্ঞরা। এ দিকে, ভারতে এই ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৬।
জীবাণু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রার উত্থান ও আর্দ্রতাপূর্ণ আবহাওয়া Sars-CoV-2 জীবাণু সংক্রমণের হার অল্প কমালেও তা একেবারে লোপ করতে পারবে না। তাঁদের দাবি, ফ্লু ইত্যাদি রোগের জীবাণু আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অকেজো হয়ে পড়লেও করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সেই তত্ত্ব অচল। চিনের গবেষকরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রায় প্রতি ১ ডিগ্রি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ০.৮৩%।
তা হলে কি গ্রীষ্মের প্রখর রোদেও বহাল তবিয়তে টিকে থাকবে করোনাভাইরাস? গত ২০ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সংক্রমণের হার বিচার করে গুয়াংঝাউ-এর সান ইয়াৎ-সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, গ্রীষ্মপ্রধান দেশে গরকমকালে সংক্রমণের হার সামান্য কমতে পারে। তবে এই মত এখনও সর্বজনগ্রাহ্য হয়নি।
আবার হারভার্ড টি এইচ চ্যান স্কুল অফ হাবলিক হেল্থ-এর গবেষকদের মতে, আবহাওয়া বৈচিত্র থাকা সত্ত্বেও চিনের ঠান্ডা ও শুকনো অঞ্চলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হারে লাগাম দেওয়া সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি, ভারতের কেরালার মতো গরম ও আর্দ্র রাজ্যেও দ্রুত হারে এই ভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
অন্য দিকে, ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছেচল্লিশে। দজুবাই ও আরব আমিরশাহি থেকে ফেরা পুনের দুই বাসিন্দার শরীরে তার সন্ধান মিলেছে বলে সোমবার জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। রাজ্যে প্রথম হানা দিল এই মারাত্মক জীবাণু। তবে দুই আক্রান্তের শারীরিক পরিস্থিতিইভ আপাতত স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, শুধুমাত্র আবহাওয়া পরিবর্তন এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে যথেষ্ট নয়। তার জন্য দরকার সামগ্রিক হারে জনস্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি। হারভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ-এর বিশেষজ্ঞ মার্ক লিপসিচ জানিয়েছেন, Sars-CoV-2 অন্যান্য বেটাকরোনাভাইরাসের মতো আচরণ করে, তা হলে তাপমাত্রা বাড়লে তার সংক্রমণের হার কমবে। তবে তা এতই নগণ্য যে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা আদৌ কমবে বলে মনে হয় না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-এর একজিকিউটিভ ডিরেক্টর মাইক রায়ানের মতে, ‘গ্রীষ্মে ফ্লু-এর মতো করোনাভাইরাসও অদৃশ্য হয়ে যাবে, এমন ভাবনা মিথ্যা আশা। আমরা এমন পূর্বাভাস করতে পারি না। এবং এই তত্ত্ব প্রমাণ সাপেক্ষ।’