রাহুল সিং এবং শিশির গুপ্ত
অগস্টের শুরুতেই আবারও আলোচনার টেবিলে ফিরতে চলেছে ভারত ও চিন। রবিবার মলডোতে পঞ্চম দফার কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে বসছে দু'দেশের সেনা।
বিষয়টির সঙ্গে অবহিত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ ডেসপ্যাং এলাকা এবং ফিঙ্গার এলাকা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। গত এপ্রিলের গোড়ার দিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার যে অবস্থা ছিল, তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা। একইসঙ্গে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া নিয়েও একপ্রস্থ আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিকরা।
সেই আলোচনার মধ্যে অবশ্য প্রস্তুতিতে কোনওরকম ফাঁক রাখতে চাইছে না ভারত। লাদাখ সেক্টরে চিনা সেনার অবস্থানের কথা মাথায় রেখে লম্বা শীতকালের প্রস্তুতি সেরে রাখছে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রের শীর্ষ কর্তারা জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থায় যদি প্রয়োজন হয়, সেজন্য আমেরিকা, রাশিয়া এবং ইউরোপের দূতাবাসে প্রতিরক্ষা আধিকারিকদের গরম পোশাক এবং বরফের মধ্যে তাঁবুর সরঞ্জাম বেছে রাখার কথা বলেছে ভারতীয় সেনা।
লাদাখ সেক্টরে সৈন্য সমাবেশ এবং সরঞ্জাম পাঠানোর বিষয়ে চিনা সেনার সঙ্গে একই জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় সেনা। যদিও ভারতীয় সেনা আধিকারিকরা একটি বিষয়ে স্পষ্ট যে ২০২১ সালে চলতি বছরের এপ্রিলের পুনরাবৃত্তি এড়াতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় নজরদারি চালাতে হবে। এক সেনা কমান্ডার বলেন, ‘পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) আগ্রাসনের পর আমরা চিনাদের বিশ্বাস করি না এবং আমাদের ভয়, ২০২১ সালে গ্রীষ্মকালেই প্যাংগং সো (লেকের) উত্তরে ওরা ফিরে আসবে।’
যদিও প্যাট্রলিং পয়েন্ট ১৪ (গালওয়ান উপত্যকা), ১৫-১৬ (হটস্প্রিং) থেকে চিন সেনা সরিয়ে নিলেও প্যাট্রলিং পয়েন্ট ১৭ এ-র (গোগরা) সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় এখনও লাল ফৌজি রয়েছে। প্যাংগং সো'র বিতর্কিত ফিঙ্গার এলাকা থেকে সেনা সরানোর সম্ভাবনাও এখনও কয়েক যোজন দূরে।
লাদাখে শীতের সময় প্যাট্রলিং পয়েন্ট ১৫, ১৬ বা ১৭-তে তেমন বরফ জমে না। কিন্তু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭,০০০ ফুট উঁচুতে চ্যাং লা পাসে পুরো বরফ ভরতি হয়ে যায় এবং তার জেরে প্যাংগং সো লেকের কাছে প্রাকৃতিকভাবেই সুরক্ষাবলয় তৈরি হয়ে যায়। দ্বিতীয় এক সেনা কমান্ডার বলেন, ‘শীতকালীন জামাকাপড়ের প্রয়োজনীয়তার জন্য আমরা শুধুমাত্র ঘরোয়া উৎপাদকদের বরাত দিইনি, সালতোরা খাঁড়ি এবং সিয়াচেন হিমবাহে মোতায়েন জওয়ান ছাড়া বাকিদের অত্যধিক শীতের পোশাক ছেড়ে দিতে বলেছি। যেমন - পারতাপুর এবং থৌসেতে মোতায়েন জওয়ানরা সিয়াচেনের জওয়ানদের মতো পোশাক পান। কিন্তু ওই দুটি ঘাঁটির উচ্চতার লেহ'চ র সমান। সবথেকে খারাপ পরিস্থিতিতে পারতাপুর এবং থৌসেতে মোতায়েন জওয়ানদের জ্যাকেট, ট্রাউজার, গ্লাভস, বুট এবং চশমা দিতে বলা হবে। যাঁরা অধিকৃত আকসাই চিন সীমান্তে মোতায়েন রয়েছেন।’