কিন্তু গমে নিষেধাজ্ঞা। গমের তৈরি জিনিসে তো নয়! এমনই নিয়মের ফাঁক দেখিয়ে সুজি, আটা, ময়দার মতো পণ্য রপ্তানি করে চলেছিলেন ব্যবসায়ীরা। এবার সে বিষয়েই নড়েচড়ে বসল কেন্দ্র। বুধবার গভীর রাতে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে এ ধরণের রপ্তানি বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
ভারত, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উত্পাদক। গত ১৩ মে দেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যক্তিগত গম রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে, পূর্বের চুক্তি বা কোনও দেশের খাদ্য সুরক্ষার জন্য অনুরোধে ব্যাতিক্রম করা হবে বলে জানানো হয়। রফতানির আগে নিতে হবে কেন্দ্রের ছাড়পত্র।
এদিকে এই নীতিতে হতাশ হন ব্যবসায়ীরা। সরকার এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ১১.১ কোটি টন রেকর্ড উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছিল। ফলে সকলেই ভেবেছিলেন যে এ বছর তাঁরা প্রচুর পরিমাণে গম রপ্তানি করবেন। কিন্তু মার্চের মাঝামাঝি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহে সব ভেস্তে যায়। সরকার উৎপাদন অনুমান ৫% কমাতে বাধ্য হয়।
এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে বিশ্বব্যাপী গমের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। সেই কারণে চড়া দামে গম বিক্রি করে ভালো মুনাফার স্বপ্ন দেখছিলেন রফতানিকারকরা। নিষেধাজ্ঞা এড়িয়েও তাই অন্য 'রূপে' গম রফতানির মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা।
নয়া নীতিতে বলা হয়েছে যে, গমের আটা এবং গম থেকে প্রাপ্ত পণ্য রপ্তানি একটি আন্তঃমন্ত্রক প্যানেলের অনুমোদন সাপেক্ষে হবে। নতুন নিষেধাজ্ঞা আগামী ১২ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ৬-১২ জুলাইয়ের মধ্যে রফতানির জন্য লোড হয়ে গিয়েছে বা শুল্ক প্রদানকৃত গমের পণ্যগুলি রপ্তানি করার অনুমতি দেওয়া হবে। তারপরে আপাতত তা বন্ধ থাকবে।
ভারত এমন একটি দেশ যা খাদ্যশস্যের দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অর্থাত্, সহজ কথায়, বিদেশ থেকে আমদানি না করেও খাদ্য সংকট এড়াতে পারবে ভারত। তাছাড়া আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিদের জন্য ভর্তুকি, রেশনের মতো ব্যবস্থাও রয়েছে। ফলে বিদেশে অতিরিক্ত উত্পাদন রফতানি করলেও, যে কোনও সরকারের প্রথম লক্ষ্য হল দেশের মধ্যে দাম স্থিতিশীল রাখা। আর সেই কারণেই বিদেশে রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা।