মলদ্বীপ এবং পাকিস্তান নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের জোড়া রিপোর্ট খারিজ করে দিল ভারত। ওই মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে চিনের ‘বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুকে ক্ষমতাচ্যুত করার ছক কষেছিল নয়াদিল্লি। আর পাকিস্তানের কিছু জঙ্গি ‘উপাদানকে’ নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। ওই দুটি রিপোর্টই খারিজ করে দিয়ে শুক্রবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, 'যে সংবাদপত্র এবং সাংবাদিককে নিয়ে কথা হচ্ছে, তাদের দেখে মনে হয় যে ভারতের প্রতি কঠোর শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব পোষণ করে। ওদের কাজকর্মে সেই ধারাটা দেখতে পাবেন। ওদের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ধারণ করার বিষয়টি আপনাদের উপরেই ছেড়ে দিলাম। আমাদের কথা বলতে গেলে (আমাদের কাছে) ওদের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।'
মলদ্বীপ নিয়ে ওই রিপোর্টে কী দাবি করা হয়?
আর ওই মার্কিন সংবাদমাধ্যমের যে রিপোর্ট নিয়ে এরকম কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে, তাতে 'গণতান্ত্রিক পুনর্নবীকরণ কর্মসূচি' নামে একটি নথি উদ্ধৃত করে দাবি করা হয় যে মুইজ্জুকে ইমপিচ করার জন্য মলদ্বীপের সংসদের ৪০ জন সদস্যকে ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। যে তালিকায় ছিলেন মুইজ্জুর দলের সাংসদরাও। বিষয়টি নিয়ে গোপনে কয়েক মাস ধরে বৈঠক চললেও শেষপর্যন্ত সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। যাঁরা ওই পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁরা মুইজ্জুকে ইমপিচ করার মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক ভোট জোগাড় করতে পারেননি।
পাকিস্তান নিয়ে কী দাবি করা হয়?
অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রসঙ্গে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয় যে 'কমপক্ষে হাফ-ডজন লোককে খতম করতে' ২০২১ সাল থেকে একটি পরিকল্পনা চালাচ্ছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা 'রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং' (র)। নাম প্রকাশ না করেই পাকিস্তানি এবং পশ্চিমী দুনিয়ার আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে ওই রিপোর্টে সেই দাবি করা হয়।
পাকিস্তানের পাশাপাশি মলদ্বীপের বিষয়ে ওই সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে যে দাবি করা হয়েছে, তা খারিজ করে দিয়েছে ভারত। দুটি বিষয়ের ক্ষেত্রেই সরাসরি ওই মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে তোপ দেগেছে নয়াদিল্লি। সেইসঙ্গে পাকিস্তানের জন্য ‘ওয়ার্নিংও’ বরাদ্দ রাখেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।
পাকিস্তানকে ‘সাপ’ ওয়ার্নিং ভারতের
শুক্রবার তিনি বলেন, 'পাকিস্তান সংক্রান্ত (রিপোর্ট নিয়ে) আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে হিলারি ক্লিন্টন কী বলেছিলেন। (উনি বলেছিলেন যে) আপনি নিজের উঠোনে সাপ রেখে আশা করতে পারেন না যে সেগুলি শুধুমাত্র প্রতিবেশীদেরই কামড়াবে।' উল্লেখ্য, পাকিস্তানের বিষয়ে ক্লিন্টনের সেই কথাটা প্রথমবার ব্যবহার করল না ভারত। আগেও সেই কথাটা বলেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আর হিলারি সেই কথাটা বলেছিলেন ২০১১ সালে, যখন তিনি আমেরিকার বিদেশ সচিব ছিলেন।