যাবতীয় চুক্তি ও নিয়ম মেনেই সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে। আন্তঃসীমান্ত অপরাধের ঘটনা রুখতে নেওয়া হচ্ছে যাবতীয় প্রয়োজনীয় সুরক্ষা। বাংলাদেশকে স্পষ্টভাষায় একথাই জানাল ভারত সরকার। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার দুপুরে সাউথ ব্লকে (নয়াদিল্লিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের কার্যালয়) বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মহম্মদ নুরাল ইসলামকে ঢেকে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে যে অতীতে যে সব সমঝোতা হয়েছিল, সেটা মেনেই পড়শি দেশ কাজ করবে বলে আশা করছে নয়াদিল্লি।
ভারতীয় ভূখণ্ডে বেড়া দেওয়া নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’ বাংলাদেশ
আর নয়াদিল্লির তরফে যেদিন সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে, তার একদিন আগেই বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে তলব করে ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যেই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছিল ঢাকা। বাংলাদেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসিমউদ্দিন দাবি করেন যে 'অনুমোদনহীনভাবেই' সীমান্তে বেড়া দিচ্ছে ভারতের সুরক্ষারক্ষা বাহিনী বিএসএফ।
সেইসঙ্গে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফে দাবি করা হয়, দু'দেশের মধ্যে আলোচনার পরই সীমান্তের ১৫০ মিটারের মধ্যে এরকম 'প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো' তৈরি করা যায়। কিন্তু কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই বেড়া দিয়ে ভারত যাবতীয় প্রোটোকল এবং চুক্তি লঙ্ঘন করছে বলে বাংলাদেশের আধিকারিকরা অভিযোগ করেন।
বেড়া দেওয়ার সব অধিকার আছে বিএসএফের, বোঝাল ভারত
যদিও সোমবারই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সীমান্তে বিএসএফ যে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে, তা দেওয়ার পুরোপুরি অধিকার আছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনীর। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে সরাসরি বলে দেওয়া হয়েছে, 'বেড়া প্রদান-সহ সীমান্তে সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে দু'দেশের মধ্যে এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যে হওয়া সমস্ত চুক্তি এবং প্রোটোকল মেনে চলেছে ভারত।'
সেইসঙ্গে নয়াদিল্লির তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ রুখতে বাংলাদেশ সহযোগিতা করবে বলে আশাপ্রকাশ করছে ভারত। কাঁটাতারের বেড়া, সীমান্তে আলো বসানো, প্রযুক্তির ব্যবহারের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে পাচার, অপরাধীদের গতিবিধি এবং মানবপাচার-সহ আন্তঃসীমান্ত অপরাধ রুখতে ভারত বদ্ধপরিকর বলে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কয়েকটি অংশে উত্তেজনা
এমনিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের স্থলসীমান্তের দৈর্ঘ্য হল ৪,০৯৬ কিলোমিটার। সেটার মধ্যে ৩,০০০ কিমির মতো অংশে ইতিমধ্যে বেড়া আছে। তবে পাচার, অনুপ্রবেশের মতো বিভিন্ন ঘটনা রুখতে বাকি অংশেও বেড়া বসানোর তোড়জোড় করা হচ্ছে। তারইমধ্যে পাঁচটি জায়গায় বেড়া বসানো নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এমনিতেই দু'দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধাক্কা খেয়েছে। সেই আবহে সীমান্তে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।