লাহোরে মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের মূর্তি ভাঙচুর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল ভারত। নয়াদিল্লির তরফে কড়া ভাষায় জানানো হল, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ‘উদ্বেগজনক হারে’ বাড়ছে। তারইমধ্যে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী মূর্তির ভাঙচুরের ঘটনার নিন্দা করেছেন। তাঁর দাবি, কয়েকজন 'অশিক্ষিত' সেই কাজ করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লাহোর ফোর্ট কমপ্লেক্সের মধ্যে থাকা মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের মূর্তিটি ভাঙচুর করেছে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান নামে একটি কট্টরপন্থী সংগঠনের এক সদস্য। ভাঙচুরের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় লোকজনই ধরে ফেলেছিলেন। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের জুনে উদ্বোধনের পর এই নিয়ে তৃতীয়বার মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের মূর্তিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। অথচ নয় ফুটের সেই ব্রোঞ্জ মূর্তিটি যথেষ্ট কড়া সুরক্ষাবেষ্টিত চত্বরে অবস্থিত। সেই পরিস্থিতিতে মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর এই ধরনের আক্রমণের মাধ্যমে পাকিস্তানে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব ফুটে উঠছে।’ সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর হিংসাত্মক ঘটনা ‘উদ্বেগজনক হারে’ বাড়ছে। সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়স্থান, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জায়গা এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর হামলা চালানোর ঘটনা বেড়ে চলেছে।
সপ্তাহদুয়েক আগেই পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খানে একটি হিন্দু মন্দিরে তাণ্ডব চালিয়েছিল উন্মত্ত জনতা। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, ‘এই ধরনের হামলা রোখার ক্ষেত্রে যে দায়িত্ব আছে, তা পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান। তার জেরে নিজেদের ধর্মীয় মতবাদ পালনের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের মনে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। সেইসঙ্গে পাকিস্তানকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং কল্যাণের বিষয়টি নিশ্চিত করার বার্তা দিয়েছে সাউথ ব্লক।
মঙ্গলবারের ঘটনার যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, মূর্তির একটি হাত ভেঙে ফেলছে এক ব্যক্তি। তারপর সেটা মাটিতে আছড়ে ফেলছে। সেই ঘটনায় তেহরিক-ই-লাব্বাইক নামে যে সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই সংগঠনের দুই সদস্য আগেও মূর্তিতে ভাঙচুর চালিয়েছিল। যা মূর্তি উদ্বোধনের চার মাসের মধ্যে হয়েছিল। এবার ঘটনাকে অবশ্য 'অশিক্ষিতদের কাজ' হিসেবে নিন্দা করেছেন ইমরান খানের সরকারের মন্ত্রী। টুইটারে ফাওয়াদ বলেছেন, 'লজ্জাজনক। বিশ্বে পাকিস্তানের ভাবমূর্তির জন্য এই ধরনের অশিক্ষিতরা অত্যন্ত বিপজ্জনক।'