ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩৯৬, সোমবার থেকে প্রায় সব বড় শহরে লকডাউন
Updated: 22 Mar 2020, 11:10 PM ISTবিশেষজ্ঞদের মতে, সংক্রমণ আটকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই 'জনতা কার্ফু' কার্যকারী সিদ্ধান্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সংক্রমণ আটকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই 'জনতা কার্ফু' কার্যকারী সিদ্ধান্ত।
কলকাতায় আরও ৩ জনের দেহে মিলল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। বালিগঞ্জের আক্রান্ত যুবকের পরিজনদের দেহে মিলল সংক্রমণ। কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৭।
নরেন্দ্র মোদী : যাঁরা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানিয়েছে দেশ। দেশবাসীকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কলকাতা থেকে দিল্লি - সর্বত্র সম্মান জানানো হল সেইসব মানুষদের যাঁরা নিজেদের ঝুঁকির পরোয়া না করে করোনা আটকাতে লড়ে যাচ্ছেন।
আর্জি জানিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইমতো 'জনতা কার্ফু'-র বিকেলে ঘড়ির কাঁটা ঠিক পাঁচটা ছুঁতেই বেজে উঠল থালা, কাঁসর, ঘণ্টা। সঙ্গে দেওয়া হল হাততালি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সম্মান জানালেন দেশবাসী।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জেরে আজ রাত ন'টা থেকে আগামী ৩১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা থাকবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত আন্তঃরাজ্য যাত্রী পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করল ভারতীয় রেল।
'জনতা কার্ফু'-তে সাড়া দিলেন বর্ধমানের মানুষ। আজ সকালে শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটও ফাঁকা ছিল। মানুষ খুব একটা রাস্তায় বেরোননি। অন্যদিকে, দুর্গাপুরের ছবিটাও এক ছিল। আর পাঁচটা রবিবার গমগম করে বেনাচিতি বাজার। সারাক্ষণ খুচরো ব্যবসায়ী, ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। আজ সেই ভিড় উধাও। একইভাবে রাস্তা শুনশান দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন বাজার, প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ডের মতো এলাকাগুলি।
করোনা সংক্রমণ রুখতে 'জনতা কার্ফু'-তে সাড়া দেশবাসীর। ফাঁকা রাস্তাঘাট। বাড়ির বাইরে তেমন কেউ বেরোননি। বন্ধ দোকানপাট।
মহারাষ্ট্র : অন্য রবিবারের তুলনায় অনেকটাই ফাঁকা মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশ। আর পাঁচটা রবিবার দাদার স্টেশনে যে ভিড়ের ছবি ধরা পড়ে, আজ তা অমিল।
জম্মু ও কাশ্মীর : প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে ফাঁকা জম্মু ও কাশ্মীর। বাড়ি থেকে তেমন কেউ বেরোননি।
শুনশান বারুইপুর। হাতেগোনা কয়েকটি লোকাল ট্রেন চললেও যাত্রী প্রায় নেই। কয়েকটি কামরায় মাত্র একজন রয়েছেন। একই ছবি রাজ্য ও জাতীয় সড়কে। তবে বারাসতের চিত্রটা কিছুটা আলাদা। মোটের উপর রাস্তা ফাঁকা থাকলেও কয়েকজন রাস্তায় বেড়িয়েছে। তাঁদের দাবি, রবিবার বলে মাংস কিনতে বেড়িয়েছেন। আবার বাড়ি ফিরে যাবেন। রাস্তায় নেমেছে সরকারি বাসও।
মালদহ : 'জনতা কার্ফু'-র ব্যাপক প্রভাব পড়েছে মালদহেও। শহরের অন্যতম ব্যস্ত রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ পুরো ফাঁকা। অন্যদিন ভিড়, যানজট লেগে থাকে।
দিল্লি : 'জনতা কার্ফু'-তে বন্ধ দিল্লির মেট্রো পরিষেবা।
ফাঁকা বানারহাটের রাস্তা। দোকানপাট বন্ধ। হাতেগোনা কয়েকজনকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে। শিলিগুড়িতেও ছবিটা এক। সেবক মোড়, তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ডে ধূ ধূ করছে। সরকারি বাস থাকলেও তাতে যাত্রী প্রায় নেই বললেই চলে।
অন্য রবিবারের তুলনায় ফাঁকা হাওড়া স্টেশন। এদিন মাত্র ৩৪০ টি লোকাল ট্রেন চলবে। ভিনরাজ্য থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের জন্য সরকারের তরফে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিউ কমপ্লেক্সের ভিতরে মেডিক্যাল ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সেখানে তিনজনের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় তাঁদের রাজারহাটে কোয়াকেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার সকালে গমগম করে মানিকতলা বাজার। প্রায় সব দোকানই বন্ধ। একটিও মাছের দোকানের খোলেনি। সবজি দোকান কয়েকটি খুলেছে। তবে তাতে ক্রেতা নেই।
শুনশান করুণাময়ী। ফাঁকা উল্টোডাঙাও। অন্য রবিবারও সকালে গমগম করে উল্টোডাঙা। স্টেশনের কাছে অটোর বড়সড় লাইন থাকে সবসময়। আজ তা কার্যত শূন্য। মাঝেমধ্যে দু'একটি অটো আসছে। তাতেও যাত্রী প্রায় নেই বললেই চলে।
ফাঁকা, শুনশান ধর্মতলা। ধর্মঘটের দিনেও কলকাতার প্রাণকেন্দ্র এরকম শুনশান থাকে না। কোনও বেসরকারি বাস দেখা যাচ্ছে না। গুটিকয়েক সরকারি বাস চোখে পড়েছে। অ্যাপ ক্যাবও প্রায় অমিল। হলুদ ট্য়াক্সির সংখ্যা হাতেগোনা। এমনকী বন্ধ চা দোকানও।
আজ সকালে শিয়ালদহে কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন পৌঁছায়। রেলের নির্দেশ মতো, কোনও দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়েনি। তবে হাতগোনা লোকাল ট্রেন ছাড়ছে। তাতে যাত্রী সংখ্যা কম। আর পাঁচটা রবিবার শিয়ালদহ ফাঁকা থাকলেও আজকের ছবিটা আরও শুনশান। এদিন শিয়ালদহ থেকে ৫০০-র মতো লোকাল ট্রেন ছাড়বে। অন্য রবিবার ৭৮৮ টি লোকাল ট্রেন ছাড়ে। যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে।
রবিবার সকালে একটি টুইটবার্তায় নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'আর কিছুক্ষণের মধ্যে জনতা কার্ফু শুরু হবে। আসুন, আমরা সবাই এই কার্ফুতে সামিল হই। যা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি যোগ করবে। আমরা এখন যে পদক্ষেপ করছি, তা আগামীদিনে সাহায্য করবে। ঘরে থাকুন ও সুস্থ থাকুন।'