কোভিশিল্ডের পর এবার ভারত থেকে কোভ্যাক্সিন রফতানি করা হতে পারে বিদেশে। ভারত বায়োটেক এবং আইসিএমআর-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি কোভ্যাক্সিন পেতে ইতিমধ্যেই হাঙ্গারি ও প্যারাগুয়ে নয়াদিল্লির কাছে আবেদন জানিয়েছে। বাণিজ্যিক ভাবে এক মিলিয়ন করে ডোজ চেয়েছে দুটি দেশ। হাঙ্গারিতে কোভ্যআক্সিন রফতানি করতে পারলে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ঢোকা আরও সহজ করে দেবে ভারত বায়োটেকের পক্ষে। তবে বিণিজ্যিক ভাবে টিকা রফতানি প্রসঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ভারত বায়োটেক।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত বায়োটেক ঘোষণা করেছিল যে মার্কিন সংস্থা অকুজেন ইনকর্পোরেশনের সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। মার্কিন মুলুকে কোভ্যাক্সিন সরবরাহ এবং বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করার লক্ষ্যে সেই চুক্তি করা হয়।
এদিকে সাম্প্রতিক কালে ভারত বায়োটেক কোভ্যাক্সিনের উৎপাদন বাড়িয়েছে। সুপ্রিমকোর্টে জমা দেওয়া এক হলফনামায় কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে যে প্রতি মাসে ৯ মিলিয়নের জায়গায় বর্তমানে ২০ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করছে। জুলাইয়ের মধ্যে তাদের মাসিক উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে ৫৫ লক্ষ হবে। কেন্দ্রের সর্বশেষ ঘোষিত নীতি অনুযায়ী উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ৫০ শতাংশ টিকা কেন্দ্রকে বিক্রি করতে হবে সংস্থাগুলিকে। বাকি ৫০ শতাংশ হাসপাতাল বা রাজ্যগুলিকে বিক্রি করা যাবে। তবে রফতানি প্রসঙ্গে কোনও কিছুই উল্লেখ করা নেই তাতে।
এই আবহে ভারত বায়োটেকের এক আধিকারিক বলেন, 'হাঙ্গারির সরকার গত এপ্রিল মাসে ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল যাতে মে মাসের শেষ পর্যন্ত ১০ মিলিয়ন ডোজ রফতানি করা হোক। এর বদলে ভারত বায়োটেকের ফেসিলিটিকে জিএমপি (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস) সার্টিফিকেট দিতে প্রস্তুত। যার ফলে ভারত বায়োটেক ইউরোপীয় বাজারে টিকা রফতানি করার ছাড়পত্র পেয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই কোভ্যাক্সিনের নমুনাকে ছাড়পত্র দিয়েছে হাঙ্গারি কর্তৃপক্ষ।' উল্লেখ্য, এর আগে বায়োটেকের ফেসিলিটিতে জিএমপি সার্টিফিকেট না থাকায় ব্রাজিলে কোভ্যাক্সিন রফতানি করতে পারেনি সংস্থা।
এদিকে প্যারাগুয়েও ভারত সরকারের কাছে কোভ্যাক্সিন আমদানি করতে চেয়ে আবেদন করেছে। এর আগে উপহার হিসেবে ২ লক্ষ টিকা প্যারাগুয়েকে দেওয়া হয়েছিল ভারতের তরফে। এই আবহে ভারত সরকারও এই সম্ভাবনার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে যাতে কোভ্যাক্সিন বিদেশে উৎপাদন করা যায়। ২০ এপ্রিল এক বিবৃতিতে ভারত বায়োটেকও জানিয়েছিল যে বিদেশে কোভ্যাক্সিন উৎপাদনের জন্য তারা পার্টনার খুঁজছে। মেক্সিকো, ফিলিপিনস, ইরান, প্যারাগুয়ে, গুয়াতামালা, নিকারাগুয়া, গায়ানা, ভেনেজুয়েলা, বটসওয়ানা, জিম্বাবোয়ে সহ বহু দেশ জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের জন্য কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে। তাছাড়া আরও ৬০টি দেশে কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।