রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে কাশ্মীর নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এর্দোগানের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করল ভারত। তাঁর ভাষণ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘বে-এক্তিয়ার হস্তক্ষেপ’ এবং ‘সম্পূর্ণ ভাবে অগ্রণযোগ্য’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমতি টুইট করে এর্দোগানের কাশ্মীর মন্তব্যের কড়া নিন্দা করেন। তিরুমতি বলেছেন, ‘অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে হস্তক্ষেপ করা যে অনুচিত, সেই ভদ্রতা শেখা দরকার তুরস্কের এবং পরিবর্তে নিজ নীতি নিয়ে আরও গভীর ভাবে পর্যালোচনা করা জরুরি।’
তিরুমতি লিখেছেন, ‘ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কাশ্মীর প্রসঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মন্তব্য আমরা দেখেছি। এতে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে, যা একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। তুরস্কের উচিত অন্য দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং নিজ নীতি নিয়ে আরও গভীর ভাবনা-চিন্তা করা।’
রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে ভিডিয়ো বার্তায় এর্দোগান বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতি বজায় রাখার প্রধান অন্তরায় হল কাশ্মীর সমস্যা যা এখনও অমীমাংসিত রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজ করার জন্য যে পদক্ষেপ করা হয়েছে, তাতে সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। আমরা রাষ্ট্রপুঞ্জের শর্তাবলীর প্রেক্ষিতে এবং অবশ্যই স্থানীয় মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী।’
এর্দোগানের মন্তব্যে স্বভাবতই উল্লসিত বন্ধুরাষ্ট্র পাকিস্তান। রাষ্ট্রপুঞ্জে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ভাষণের পরেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইট করেন, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জোের সাধারণ পরিষদে তাঁর ভাষণে কাশ্মীরের মানুষের অধিকার নিয়ে প্রেসিডেন্ট এর্দোগানের ভাষণকে গভীর ভাবে স্বাগত জানাই। তুরস্কের অচঞ্চল সমর্থন কাশ্মীরিদের আত্মনির্ধারণ সংগ্রামের শক্তির উৎস বিশেষ।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে কাশ্মীর নিয়ে ভারত সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যে সমস্ত দেশ গলা তুলেছিল, তুরস্ক তাদের অন্যতম। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে, ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া এমন বার্তাতেও সে সময় পিছু হঠেননি এর্দোগান।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে পাক সফরে গিয়ে কাশ্মীর নিয়ে এর্দোগানের কটুক্তির তীব্র সমালোচনা জানাতে নয়া দিল্লিতে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সাবধান করা হয়েছিল। সে বারও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে না গলানোর অভিযোগ উঠেছিল তুর্কি রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার থেকে যে তিনি বিন্দুমাত্র শিক্ষা নেননি, মঙ্গলবারের ভাষণই তার স্পষ্ট প্রমাণ।