সীমান্ত ইস্যু নিয়ে নেপালের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হল বিদেশসচিব হর্ষ শ্রিংলার। চলতি বছরে সীমান্ত সমস্যার জেরে দুই দেশের সম্পর্কে অনেকটা চিড় ধরে। সেটা মেরামত করার জন্যই বর্তমানে দুই দিনের সফরে কাঠমান্ডুতে গিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব। যোগাযোগ, কোভিড ম্যানেজমেন্ট ও পরিকাঠামো উন্নয়নে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়েও এদিন আলোচনা হয়।
প্রথমদিন শ্রিংলা বৈঠক করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, বিদেশমন্ত্রী প্রদীপ গাওয়ালি ও বিদেশসচিব ভারত রাজ পৌডিয়ালের সঙ্গে। মানস সরোবরের জন্য লিপুলেখ দিয়ে ভারত রাস্তা তৈরি করার পর নেপাল পালটা ম্যাপ প্রকাশ করে। সেখানে ভারতের তিনটি অংশ নেপালের মধ্যে বলে দেখানো হয়, যদিও সেই ম্যাপ খারিজ করে ভারত।
সূত্রের খবর, ওলির সঙ্গে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা হয়েছে বিদেশসচিবের। দুই দেশের জন্য যে সব বিষয়গুলি সংবেদনশীল, সেগুলিকে সম্মান করার বিষয়টিও আলোচনা হয়।
সীমান্ত ইস্যুতে দুই দেশ নিজেদের অবস্থানের কথা তুলে ধরে ও কীভাবে দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ায় এই নিয়ে আলোচনা চলতে পারে, সেই নিয়েও কথা হয়। নেপালের বিদেশমন্ত্রকের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে সীমান্ত ইস্যু নিয়ে বিদেশসচিবদের মধ্যে কথা হয়েছে ও যেসব জায়গায় এখনও কাজ অমীমাংসিত, সেটি শেষ করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে ১৭৭০ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত আছে। এর মধ্যে ৯৮ শতাংশ চিহ্নিত ও কোনও বিতর্ক নেই। শুধু কালাপানি ও সুস্তা অঞ্চল নিয়ে দুই দেশের মধ্য টানাপোড়েন রয়েছে।
নেপালে ভূমিকম্প পর্ববর্তী যে সব প্রকল্প ভারতের সহায়তায় চলছে সেগুলি নিয়ে এদিন আলোচনা হয়। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, পঞ্চেশ্বর প্রজেক্ট চালু করা ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যকলাপ চালু করা নিয়ে ওলির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ভারতীয় বিদেশসচিবের।
বিভিন্ন পারস্পরিক গুরুত্বের বিষয় কীভাবে সমস্যা নিরসন করা যায় সেই নিয়ে কথা হয়। নেপাল ও ভারতের মধ্যে বিমান ব্যবস্থা চালু করার জন্য বিশেষ বাবল তৈরি করা নিয়েও আলোচনা হয়। এদিন কোভিডের চিকিৎসার জন্য ২০০০ ভায়াল রেমডেসিভির নেপালকে দেন শ্রীংলা। করোনা টিকা বেরোলে যে নেপালের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রদের আগে দেওয়া হবে, সেই নিয়েও তিনি আশ্বাস দেন।
এদিন স্থানীয় মিডিয়ার সঙ্গে নেপালি ভাষায় কথা বলেন হর্ষ শ্রিংলা। তিনি বলেন যে ভারত ও নেপাল ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সেই সম্পর্ককে আগে নিয়ে যাওয়ার জন্যেই তিনি এসেছেন। নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি ও নেপালি কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গেও তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।