ছিল 'স্বাধীন'। হল 'আংশিক স্বাধীন'। মার্কিন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'ফ্রিডম হাউজ-এর রিপোর্টে এমনই পতন হয়েছে ভারতের অবস্থানের গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে । ফ্রিডম হাউজ কোনও অনামী সংস্থা নয়। বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতার মানদণ্ড হিসাবে তাদের বার্ষিক রিপোর্ট বহু ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
বহু পুরনো মার্কিন সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতার বিষয়ে গবেষণা চালায়। এই বিষয়ে প্রতি বছর 'ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড' নামের রিপোর্ট প্রকাশ করে সংস্থা। প্রথমবার এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। জীবনযাত্রার মান, রাজনৈতিক পরিবেশ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, আইন প্রণয়ন, নির্বাচনের পরিবেশ ইত্যাদি বহু মাপকাঠির মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে নম্বর দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী কোনও দেশের স্বাধীনতার মানকে 'স্বাধীন', 'আংশিক স্বাধীন' ও 'পরাধীন' হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
চলতি বছরের রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে এক সময়ে গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল ভারতের। কিন্তু বর্তমানে আর সেই পরিস্থিতি নেই। রিপোর্টে পর্যবেক্ষণ, সামনের সারির স্বাধীন দেশের তালিকা থেকে ভারতের এই অধঃপতন বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের মানকে আরও নিচু করে তুলবে।
এর আগে ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল অর্থাত্ গত বছর পর্যন্তও এই বার্ষিক রিপোর্টে ভারতের পরিচিতি ছিল স্বাধীন দেশ হিসাবে। যদিও এই সময়েও স্বাধীনতার মান-এর স্কোর ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হয়েছে। ২০১৮ সালের স্বাধীনতার মান ছিল ১০০-র মধ্যে ৭৭। ২০২০-তে সেটা কমে দাঁড়ায় ৭১। আর চলতি বছরেও অব্যাহত সেই ধারা। বর্তমানে ভারতের স্কোর ১০০-র মধ্যে ৬৭ ।
চলতি বছরের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, '২০১৪ সাল থেকে মানবাধিকার সংগঠনগুলির উপর চাপ সৃষ্টি, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের হেনস্থা ও ভয় দেখানো এবং সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কারণেই ভারতের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও সামাজিক স্বাধীনতা ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।' রিপোর্টটির বিষয়ে এখনও সরকারি তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।