মার্কিন মুলুকে বসবাসকারী গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে সম্প্রতি দেখা গিয়েছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এই আবহে গতকাল বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, 'জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করবে ভারত। যেখানেই ভারত বিরোধী কার্যকলাপ হচ্ছে, আমরা বিষয়টি নিয়ে মার্কিন সরকারকে অবগত করব। যে যে ক্ষেত্রে ভারত বিরোধী অ্যাজেন্ডা আছে, এবং যেখানে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে মুখ খুলবে ভারত।' (আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি বাতিল? মুখ খুলল ভারতীয় সংস্থা)
আরও পড়ুন: শীর্ষে ওড়িশা, আর্থিক স্বাস্থ্যের নিরিখে নীচের সারিতে বাংলা: নীতি আয়োগ
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাই, সীমান্তে কাঁটাতার বিবাদের মাঝে বার্তা ভারতের
উল্লেখ্য, দাবি করা হয়েছিল, গত ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের সময় লিবার্টি হলে উপস্থিত ছিলেন পান্নুন। দাবি করা হয়েছে, সরকারের তরফ থেকে পান্নুন আমন্ত্রিত ছিল না। তবে নিজের টাকা খরচ করে অনুষ্ঠানের টিকিট কিনতে সমর্থ হয়েছিলেন পান্নুন। এদিকে ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা যায়, লিবার্টি হলে অনুষ্ঠান চলাকালীন খলিস্তানের সমর্থনে স্লোগান তুলছিল পান্নুন। (আরও পড়ুন: বন্দে ভারত ছুটল কাশ্মীরে, পথে পড়বে অঞ্জি খাদ ও চেনাব রেল ব্রিজ, দেখুন ভিডিয়ো)
আরও পড়ুন: দেওয়ালে ছিল রক্তের ছোপ, কেন 'সিল করে' আরজি করের ৮ তলার ঘর পরীক্ষা করেনি CBI?
এদিকে খলিস্তানি বিচ্ছিনতাবাদী নেতা খুনের ছক কষার মামলায় সম্প্রতি ‘জনৈক ব্যক্তি’র বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের কমিটি। সাম্প্রতিক রিপোর্ট দাবি করা হয়েছে, এফবিআই সেই জনৈক ব্যক্তি - 'CC1'-কে বিকাশ যাদব বলে চিহ্নিত করেছে। দাবি করা হয়, এই বিকাশ যাদব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের প্রাক্তন অফিসার ছিলেন। এদিকে পৃথক এক মালায় এই বিকাশ যাদব বিগত দিনে জেলেও থেকেছে ভারতে। এই বিকাশের নামে ওয়ান্টেড পোস্টার জারি করেছিল এফবিআই। এদিকে খলিস্তান ইস্যুতে বিগত দিনে ভারত-কানাডার দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের ঘটনায়। সেখানে ভারতের দিকে আঙুল তুলেছিল কানাডা। সেই সময় কানাডার পাশেই দাঁড়িয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। (আরও পড়ুন: 'ভারতই সব কিছুর মূলে', ভরা সভায় 'খুনের' নিদান বাংলাদেশি ইসলামি নেতার)
আরও পড়ুন: গড়ে উঠবে নতুন ২ কারখানা, কয়েক কোটির বিনিয়োগ হবে হলদিয়ায়
উল্লেখ্য, পান্নুনকাণ্ডে ইতিমধ্যেই ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তাকে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে প্রত্যর্পণ করে মার্কিন মুলুকে নিয়ে গিয়েছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ। প্রসঙ্গত, মার্কিন নাগরিক খলিস্তানি নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ছক কষার অভিযোগে নিখিলকে গেফতার করা হয়েছিল চেক প্রজাতন্ত্রে। গ্রেফতারির প্রায় একবছর পর চেক পুলিশ তাঁকে তুলে দিয়েছিল মার্কিন বিচার বিভাগের কাছে। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার পরে নিখিলকে আদালতে পেশ করা হয়েছিল পান্নুন হত্যার চেষ্টার মামলায়। সেই মামলায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন নিখিল। (আরও পড়ুন: ঢাকায় হিন্দু ব্যবসায়ীকে গুলি, ছিনিয়ে নেওয়া হল ৮০০ গ্রাম সোনা ও ৪ লাখ নগদ)
আরও পড়ুন: ট্রাম্প প্রশাসনের বড় পদক্ষেপ, ইউক্রেনের পায়ের তলা থেকে মই টেনে নিল আমেরিকা
পান্নুন কাণ্ডে নিখিলের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
নিখিলের বিরুদ্ধে ‘খুনের জন্য বরাত দেওয়ার’ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে আমেরিকার আদালতে। ভারত সরকারের এক এজেন্সির প্রাক্তন আধিকারিকের নির্দেশেই নাকি নিখিল এই কাজ করেছিলেন। দাবি করা হয়েছিল। দাবি করা হচ্ছে, উল্লেখিত সেই প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকই আদতে বিকাশ। মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের তরফে দাবি করা হয়, খলিস্তানি জঙ্গিকে হত্যার জন্য ১ লাখ মার্কিন ডলারের রফা হয়েছিল। অগ্রিম বাবদ 'আততায়ী'-কে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া হয়। তবে সেই 'আততায়ী' আদতে মার্কিন প্রশাসনেরই 'আন্ডার কভার এজেন্ট' ছিল। এরপরই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয় মার্কিন প্রশাসন। (আরও পড়ুন: '…ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হবে বাংলাদেশ', শঙ্কায় ঢুবে পড়শি দেশের সংবাদ সম্পাদক)
আরও পড়ুন: প্রথমে ধর্ষণ, তারপর খুন করা হল বাংলাদেশি তরুণীকে, দেহ মিলল কর্ণাটকের লেকের পাশে
কে এই বিকাশ যাদব?
রিপোর্ট অনুযায়ী, আর্থিক প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল বিকাশ যাদবকে। লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাঙের সঙ্গে তাঁর যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। ৩৯ বছর বয়সি বিকাশকে 'র'-তে নিয়োগ করেছিল ক্যাবিনেট সচিবালয়। তবে বর্তমানে তিনি সরকারি কর্মী হিসেবে নিযুক্ত নন। বিকাশের বাবা বিএসএফ কর্মী ছিলেন। ২০০৭ সালে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। বিকাশের বিয়ে হয়েছিল ২০১৫ সালে। বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী একজন আইটি সংস্থার মালিক। তাঁর অভিযোগ ছিল, পশ্চিম এশিয়ায় বসবাসকারী বেশ কয়েকজন বন্ধুর বিষয়ে বিকাশ আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। সেই অভিযোগকারীকে নাকি অপহরণ করেছিলেন বিকাশ। জেরায় বিকাশের এক সহযোগী দাবি করেন, ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় বিকাশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।