তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের উচ্চ অববাহিকায় (ইয়ারলুং সাংপো) বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণ করতে চলেছে চিন। এই নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছে দিল্লি। এই বাঁধ নিয়েই এবার সংসদে প্রশ্ন উঠল। এই আবহে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বললেন, 'চিনের ঘোষিত প্রকল্পের বিষয়টি সরকার নোট করেছে।' মন্ত্রী জানান, ২০০৬ সালে স্থাপিত 'ইনস্টিটিউশনালাইজড এক্সপর্ট লেভেল মেকানিজমে'র মাধ্যমেই সীমান্ত পার নদী নিয়ে চিনের সঙ্গে ভারত আলোচনা করে থাকে। (আরও পড়ুন: 'বাথরুমেও শিকল…', আমেরিকা থেকে সন্তানকে নিয়ে যেভাবে ফিরেছেন অবৈধবাসী লাভপ্রীত)
আরও পড়ুন: টাটা সন্সের প্রধান হলেও উইলে নেই নোয়েলের নাম, সৎ ভাইকে নিয়ে কী ভাবতেন রতন?
এদিকে মন্ত্রী জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর এই ইস্যুতে চিনের কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে ভারত। বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি সম্প্রতি চিন সফরে গিয়েছিলেন। সেই সময়ও তিনি এই বিষয়টি উত্থপিত করেছিলেন। এই বাঁধ নিয়ে চিন যাতে আরও স্বচ্ছতা বজায় রাখে, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আবহে খুব দ্রুত এক্সপার্ট লেভেল মেকানিজমের একটি বৈঠক করে ব্রহ্মপুত্রের জল নিয়ে তথ্য আদানপ্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। (আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের দাবি মানল না সুপ্রিম কোর্ট, CJI বললেন...)
আরও পড়ুন: রতন টাটার ৫০০ কোটির সম্পত্তি পাওয়া মোহিনী মোহন দত্ত কে? কীভাবে পরিচয় দু'জনের?
উল্লেখ্য, তিব্বতের যে অংশে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন, তা হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের সেই অংশের অন্তর্গত, যেখানকার ভৌগোলিক, প্রাকৃতিক এবং বাস্তুতন্ত্রগত অবস্থান অত্যন্ত সংবেদনশীল। এই প্রকল্প খাতে ১৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করতে চলেছে চিন। এই নিয়ে এর আগে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেছিলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হলে সংশ্লিষ্ট নদীর গতিপথের নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত অঞ্চলগুলির কোনও ক্ষতি হবে না। কয়েক দশকের সমীক্ষার পরই তাঁরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন মাও নিং। (আরও পড়ুন: মুজিবের বাড়ি ভাঙা নিয়ে মুখ খুলল ভারত, ইউনুসের 'হাসিনা অজুহাতের' পর দিল্লি বলল…)
আরও পড়ুন: গাজা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্য ঠিক কী? বিতর্কের আগুনে জল পড়ছে, না ঘি?
এদিকে ২০২৩ সালের ফেব্রয়ারিতেই দেশের সর্ববৃহৎ বাঁধের অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্র। ২০২৪ সালের ৯ মার্চ সেই বাঁধের বিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই 'দিবাং মাল্টিপার্পাস প্রোজেক্ট' চিনা সীমান্তের খুব কাছে তৈরি হচ্ছে। 'ন্যাশনাল হাইড্রোইলেক্ট্রিসিটি পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড' এই প্রকল্প তৈরির দায়িত্বে আছে। অরুণাচলপ্রদেশের লোওয়ার দিবাং উপত্যকায় দিবাং নদীর ওপর তৈরি হবে এই বাঁধ বা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এর থেকে ২৮৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বছরে। এই প্রকল্পটি তৈরি করতে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা লাগবে। অনুমান করা হচ্ছে, মোট নয় বছর লাগতে পারে এই বাঁধটি নির্মাণ করতে।
ভূগর্ভস্থ ভিতের ওপর ২৭৮ মিটার লম্বা বাঁধ তৈরি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে দিবাং নদীর ওপর। বাঁধটি কংক্রিটের হবে। এই বাঁধটি ঘোড়ার খুরের আকারে তৈরি করা হবে। ৩০০ থেকে ৬০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯ মিটার ব্যাসের টানেল থাকবে এই বাঁধের নীচে। এই বাঁধের নীচে ভূগর্ভস্থ একটি পাওয়ার হাউজ থাকবে। জলের স্রোতকে কাজে লাগিয়ে সেখান থেকেই বিদ্যুৎ তৈরি হবে।